চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দেশের বিরুদ্ধে উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর গণহত্যার অভিযোগ ‘হাস্যকরভাবে অযৌক্তিক’ এবং ‘ডাহা মিথ্যা’।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আজ রোববার বেইজিংয়ে নিয়মিত বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছেন বলে বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশ উইঘুর জাতিসত্তার ওপর চীনের অত্যাচারের বর্ণনা করতে গিয়ে ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার করেছে।
সম্প্রতি চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে ‘সংশোধনাগার শিবির’-এ উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের বেশ কিছু নথি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। এর মধ্যেই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন মন্তব্য করলেন।
চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা উইঘুর নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যা করে দিচ্ছে এবং শিশুদের তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের অনুসন্ধানে উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকজনকে কাজ করতে বাধ্য করার প্রমাণ মিলেছে। সেখানকার নারীদের পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ ও নির্যাতন করারও প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, অন্তত ১০ লাখ মুসলিম সংখ্যালঘু ওই শিবিরে বন্দী রয়েছেন। তবে চীন বলছে, উগ্রবাদ দূর করতে সেখানে তাঁদের কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুজনই উইঘুর সম্প্রদায়ের প্রতি চীনের আচরণকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কানাডা ও ডাচ সংসদেও একই কথা বলা হয়েছে।
গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তি সম্পর্কিত জাতিসংঘের সম্মেলনে গণহত্যাকে জাতীয় বা জাতিগত, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীটিকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশে করা কাজ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
চীনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের কারণে কয়েকটি দেশে বেইজিংয়ের ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক বর্জনের কথা উঠেছে।
রোববারের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমা রাজনীতিবিদেরা জিনজিয়াংয়ে ঘটনায় মিথ্যা তথ্যের ওপর আস্থা রাখছেন। চীনের পক্ষ থেকে ওই অঞ্চল পরিদর্শনে সবাইকে স্বাগত জানানো হবে।
ওয়াং ইর বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, জিনজিয়াংয়ে তথাকথিত গণহত্যা হাস্যকরভাবে অযৌক্তিক। এটি হীন উদ্দেশ্যে এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যে ভরা একটি গুজব।