করোনা কেড়ে নিয়েছে দুনিয়ার সব সাধারণ মানুষের সুখ। কিন্তু ভোগবিলাসী অনেকেই করোনাকে কেয়ার না করে বেশ ফুর্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। লকডাউনে ঘরে বসে অভিজাত রেস্তোরাঁ থেকে খাবার আনিয়ে খাচ্ছেন। আলস্যে গা ভাসিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন বিনোদন। বাইরের দুনিয়ায় কে না খেয়ে থাকল, কে মরল, এ নিয়ে তাঁদের কোনো মাথাব্যথাই নেই।
লকডাউন পরিস্থিতি পুরোপুরি উপভোগ করছেন ব্যাংকককের মিলিওনিয়ার ক্লাবের সদস্যরা। বিলাসবহুল জীবনযাপনে কোটিপতিদের কাটছে সংকটের এ সময়টা। কালো সিডানে করে কর্মচারীরা বয়ে আনছে ফরমাশ করা অঢেল খাবার। লকডাউনে ভেঙে পড়া অর্থনীতি, শত শত লোকের বেকারত্ব, ভুখানাঙ্গা মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে তাঁরা ভাবছেনই না।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম অসম দেশ। ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য সেখানে বেড়েই চলেছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এ বৈষম্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে। দেশটিতে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সরকারি সাহায্যের জন্য নিবন্ধন করেছে। ব্যাংককজুড়ে শত শত মানুষ খাবার ও সাহায্যের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছ। ১৯৯৭ সালে এশিয়ার আর্থিংক সংকটের পর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি থাইল্যান্ডে দেখা যাচ্ছে।
ধনী ব্যাংককবাসীদের ক্ষেত্রে অবশ্য মহামারিতে সীমাবদ্ধ চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। রাতের কারফিউ এখনো জারি থাকলেও কিছু কিছু ব্যবসা খুলতে শুরু করেছে। তবে তাঁদের জীবনযাপনের প্রাচুর্য এতে কমেনি।
খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিলভার ভয়েজ ক্লাব শীর্ষ শ্রেণীর রেস্তোঁরাগুলেো থেকে অভিজাত ব্যক্তিদের আকাঙ্ক্ষা মেটাতে খাবার সরবরাহসহসহ পরিষেবাগুলো পুনরায় চালু করেছে।
ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা জাকাপুন রতনপেত বলেন, 'আমাদের শীর্ষস্থানীয় গ্রাহকেরা হলেন বিভিন্ন ব্যাংকের ধনী ব্যক্তিরা। যাঁদেরে কমপক্ষে ১০ লাখ মার্কিন ডলার আছে, তাঁরা এর সদস্য হতে পারেন।'
সদস্যদের জন্য 'হোয়াইট গ্লাভ ডেলিভারি' নামে বিশেষ সেবা চালু করেছেন তাঁরা। বিভিন্ন রেস্তেোরাঁ থেকে সেরা খাবারগুলো গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেন তাঁরা। খাবারের সঙ্গে একজন করে সাদা দস্তানা পরা একজন খানসামা সরবরাহ করা হয়। যিনি এসব ব্যক্তিদের খাবার টেবিল সাজান এবং খাবার পরিবেশনে সাহায্য করেন।
জাকাপুন রতনপেত বলেন, হোয়াইট গ্লাভসের পক্ষ থেকে হাসপাতালের সম্মুখ সারির কর্মীদের জন্য প্রতিদিন এক হাজার মিল তাঁরা অনুদান দেন।
ফোর্বসের মতে, থাইল্যান্ডে ২৭ জন বিলিয়নিয়ার রয়েছেন। এর মধ্যে শীর্ষে চেরাভান্ত পরিবার। তাঁদের সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ২৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত মাসে তাঁরা ২ কেোটি ৭০ লাখ ডলার সরকারি তহবিলে দান করেছেন।
গত রোববার থেকে ব্যাংকককের রেস্তোঁরাগুলোতে বিধিনিষেধ সহজ করা হয়েছে। গ্রাহকেরা সামাজিক দূরত্ব মেনে খেতে পারবেন।