করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর সেরে ওঠা ব্যক্তিদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ মস্তিষ্কের নানা রোগে ভোগেন। গতকাল মঙ্গলবার ‘দ্য ল্যানসেট সাইকিয়াট্রি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, করোনায় সংক্রমিত তিনজনের মধ্যে একজনের দীর্ঘস্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য বা স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ রয়েছে। আজ বুধবার সিএনএন অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষকেরা বলছেন, করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠা ৩৪ শতাংশ ব্যক্তির সংক্রমিত হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে স্নায়বিক বা মানসিক সমস্যা ধরা পড়ছে।
গবেষণায় দেখা যায়, আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ভোগেন দুশ্চিন্তায়। ১৭ শতাংশের মধ্যে এ সমস্যা দেখা যায়। ১৪ শতাংশের মধ্যে দেখা যায় মেজাজের ওঠানামার সমস্যা।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে স্নায়বিক সমস্যা বেশি তীব্র দেখা গেছে।
গবেষণাটির সহলেখক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোচিকিৎসার ফেলো ম্যাক্সিম টাকুয়েট বলেন, ‘আমাদের গবেষণার ফলাফল এই ইঙ্গিত দেয় যে ফ্লু বা অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের চেয়ে করোনার পর মস্তিষ্কের রোগ ও মানসিক সমস্যা বেশি দেখা যায়।’
সংক্রমণের ছয় মাস পার হওয়ার পর আক্রান্তের ক্ষেত্রে কী ঘটে, তা এখন দেখতে হবে বলে মন্তব্য করেন ম্যাক্সিম।
গবেষকেরা বলছেন, করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় কীভাবে সহায়তা করা যেতে পারে, তার ক্ষেত্রে এ গবেষণা ভূমিকা রাখবে।
গবেষণাটির পরিসর ছিল বেশ বড়। ২ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি করোনা রোগীর ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্যগত তথ্য এ গবেষণায় বিশ্লেষণ করা হয়।
গবেষকেরা দেখতে পান, ফ্লু থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের চেয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের স্নায়বিক ও মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি ৪৪ শতাংশ বেশি।
করোনায় সংক্রমিত হওয়া ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের সমস্যার দিকটি উঠে আসায় গবেষণাটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামের মনোরোগবিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক মুসা সামি।