করোনাভাইরাস সন্দেহে জাহাজে চার দিন অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত হয়েছেন সাড়ে তিন হাজারের বেশি যাত্রী ও ক্রু। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তাঁদের করোনাভাইরাস নেগেটিভ আসার পর জাহাজ থেকে তীরে নামতে দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ড্রিম নামের জাহাজটি হংকংয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, আগের সমুদ্রযাত্রায় জাহাজটির কিছু কর্মীর করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে থাকার আশঙ্কা থেকে পুরো জাহাজের ৩ হাজার ৬০০ যাত্রী ও ক্রুকে পৃথক রাখা হয় এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
ওয়ার্ল্ড ড্রিম এর আগে গত ১৯ ও ২৪ জানুয়ারি তিনজন চীনা যাত্রীকে ভিয়েতনামে পরিবহন করেছিল, যাঁদের পরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। দায়িত্ব পালনের সময় ওই তিনজনের সংস্পর্শে জাহাজটির কিছু কর্মীকে যেতে হয়েছিল।
জাপানে আরেকটি জাহাজকে এভাবে পৃথক রাখা হয়েছে। ওই জাহাজের বেশ কয়েকজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
চীনের নতুন করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৯১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুজন ছাড়া বাকি সবাই চীনের।
করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই মারা গেছেন ৮০০–এর বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এর বেশির ভাগই চীনের। মৃত্যুর সংখ্যায় করোনাভাইরাস সার্সকেও (সিভিয়ার অ্যাকুইট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ছাড়িয়ে গেছে। ২০০৩ সালে সার্সে আক্রান্ত হয়ে ২৪টিরও বেশি দেশের ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এর বেশির ভাগই ছিলেন চীনের।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়ার্ল্ড ড্রিম জাহাজটিকে গত বুধবার পৃথক করে রাখা হয়। জাহাজটি থেকে কোনো যাত্রীকে নামতে না দিয়ে চার দিন অবরুদ্ধ রাখা হয় এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
হংকংয়ের প্রধান বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেং ইইউ-হং জানান, সব ক্রুসহ ১ হাজার ৮০০ ব্যক্তির করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। পরে জাহাজের সবাইকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়।
গতকাল হংকংয়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোফিয়া চ্যান জানান, ৪৬৮ জনকে বাড়ি, হোটেলকক্ষ বা সরকার পরিচালিত সেন্টার থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চীন থেকে হংকংয়ে আসা ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক দুই সপ্তাহ পৃথক থাকার বাধ্যবাধকতা জারির এক দিন পর এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাপানের ইয়োকোহামা শহরে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পৃথক রাখা হয়েছে ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামের জাহাজটিকে। এ জাহাজে বেশ কয়েকজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজের ৬৪ জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। জাহাজটিতে ৩ হাজার ৭০০ যাত্রী ও ক্রু রয়েছেন।