করমর্দনের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক বৈঠকে ট্রাম্প ও কিম

সিঙ্গাপুরে বহু কাঙ্ক্ষিত বৈঠক করছেন কিম জং-উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
সিঙ্গাপুরে বহু কাঙ্ক্ষিত বৈঠক করছেন কিম জং-উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

করমর্দনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন সিঙ্গাপুরে আজ মঙ্গলবার বহু আকাঙ্ক্ষিত বৈঠক করছেন।

নানা নাটকীয়তা ও অনিশ্চয়তার পর অবশেষে দুই নেতা এক টেবিলে মুখোমুখি বসলেন। সিঙ্গাপুরের অবকাশ দ্বীপ সেন্তোসার বিলাসবহুল ক্যাপেলা হোটেলে এই ঐতিহাসিক বৈঠক হচ্ছে।

বৈঠকে ইতিবাচক ফল হবে—এমন আশায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার অপেক্ষায় বিশ্ববাসী। ট্রাম্প ও কিমের বৈঠকের ইতিবাচক ফল কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করাসহ সারা বিশ্বেই শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিতে পারে।

আজ স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে ট্রাম্প ও কিম প্রাথমিক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর শুরু হয় একান্ত বৈঠক। পরে বর্ধিত বৈঠক। এতে দুই দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকছেন। তাঁরা মধ্যাহ্নভোজও করবেন।

করমর্দন করছেন কিম জং-উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার এই শীর্ষ বৈঠক দ্বিতীয় দিনেও গড়াতে পারে বলে জানিয়েছে বিবিসি। তবে ট্রাম্পের আজই স্থানীয় সময় রাত ৮টায় ওয়াশিংটনের উদ্দেশে সিঙ্গাপুর ত্যাগ করার কথা। আর কিম স্থানীয় সময় বেলা দুইটায় সিঙ্গাপুর ছাড়তে পারেন।

কিছুদিন আগেও এই বৈঠক অকল্পনীয় ছিল। একবার বৈঠকের তারিখ চূড়ান্ত করেও তা বাতিল করেছিলেন ট্রাম্প নিজেই। তবে উত্তর কোরিয়া বৈঠক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে হাল ছাড়েনি। নেপথ্যে কাজ করেন কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধান ও কূটনীতিকেরা। এসব প্রয়াসের পর বৈঠকে অংশ নিতে ট্রাম্প ও কিম গত রোববার সিঙ্গাপুরে যান। গতকাল সোমবার বৈঠকের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারেন ট্রাম্প ও কিম। আর আজ দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে প্রথম বৈঠক হচ্ছে।

গতকাল সিঙ্গাপুরের এক হোটেলে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা। পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে বিদ্যমান মতপার্থক্য কমাতে দুই দেশের মধ্যে আস্থার সেতু তৈরির চেষ্টা করেন তাঁরা।

নির্দিষ্টভাবে কিছু উল্লেখ না করলেও পিয়ংইয়ং চায় অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ‘বৈরিতার নীতি’রও অবসান চায়। বিনিময়ে পিয়ংইয়ং পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে কী ছাড় দেবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘পুরোপুরি, যাচাইযোগ্য ও অপরিবর্তনীয়’ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে রাজি হলে উত্তর কোরিয়াকে এক ‘অনন্য’ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

নজিরবিহীন এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু হয় গত বছর; যখন ট্রাম্প ও কিম তর্কযুদ্ধ, কাদা-ছোড়াছুড়ি, পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে জড়িয়েছিলেন। দৃশ্যপট বদলে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সেদিন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কিম। ২৬ মে আরও এক দফা বৈঠক করেন তাঁরা। দুটি বৈঠকই হয় দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী অসামরিকায়িত এলাকা পানমুনজমে। এর মাঝে দুই দফায় চীন সফর করেন কিম। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই পিয়ংইয়ং সফর করেন মাইক পম্পেও।