মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক মামলা হয়েছে। তার মধ্যে একটি মামলা হয়েছে অবৈধভাবে আমদানি করা ওয়াকিটকি রাখার অভিযোগে। এই মামলায় তাঁর দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। গতকাল বুধবার দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
আমদানি-রপ্তানি আইনে দায়ের হওয়া মামলায় সু চিকে ১৪ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এনএলডির এক মুখপাত্র এ তথ্য জানান।
মিয়ানমারের রাজধানীর একটি পুলিশ স্টেশনে দায়ের হওয়া মামলার নথি থেকে জানা যায়, নেপিডোতে সু চির বাসভবনে সেনা কর্মকর্তারা তল্লাশি চালিয়ে ছিলেন। তল্লাশিকালে তাঁরা সু চির বাসভবনে একাধিক ওয়াকিটকি পান।
মামলার নথি অনুযায়ী, সু চির বাসভবনে পাওয়া এসব ওয়াকিটকি অবৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে। সু চির দেহরক্ষীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এই ওয়াকিটকিগুলো ব্যবহার করেছেন।
অবৈধভাবে আমদানি করা ওয়াকিটকি রাখার অভিযোগে সু চির বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।
অবৈধভাবে আমদানি করা ওয়াকিটকি রাখার অভিযোগের মামলায় সু চির সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে গার্ডিয়ান জানিয়েছে।
মিয়ানমারের একটি রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, গত নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করবে দেশটির সামরিক সরকার।
নভেম্বরের ওই নির্বাচনে সেনাসমর্থিত দলের ভরাডুবি হয়। অন্যদিকে, বিপুল জয় পায় সু চির এনএলডি।
সু চির পাশাপাশি তাঁর সরকারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উই মিন্তের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। মহামারি (করোনা) বিধি ভঙ্গ করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
উই মিন্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নির্বাচনী প্রচারের সময় মহামারিকালীন বিধিনিষেধ ভেঙেছেন। এই মামলায় উই মিন্তকে দুই সপ্তাহের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
সু চি বর্তমানে রাজধানী নেপিডোয় নিজ বাসভবনে আটক আছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে সরকারি সূত্র এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেনি।
গত সোমবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান করে। সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডির নির্বাচিত সরকার উৎখাত করে তারা ক্ষমতা দখল করে।
মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষ দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। পাশাপাশি সু চিসহ দেশটির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার ও আটক করেছে।
সু চিসহ মিয়ানমারের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার-আটকের ঘটনায় গতকাল দেশটির ৩০টি শহরের ৭০টি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা ধর্মঘট শুরু করেছেন। নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনের ব্যানারে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।