দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চীন শেষমেশ স্বীকার করল যে দেশটিতে নতুন করে উপসর্গহীন ১৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন এ তথ্য প্রকাশ করে।
এর আগে যাদের মধ্যে করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়ে, তাদের মোট সংখ্যা প্রকাশ করে দক্ষিণ কোরিয়া ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর মধ্যে অনেকের উপসর্গ দেখা যায়নি। এ প্রেক্ষাপটে উপসর্গহীন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের তথ্য প্রকাশের জন্য চীনের ওপরও চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল।
কমিশন জানিয়েছে, দেশটিতে উপসর্গহীন করোনায় আক্রান্ত মোট ১ হাজার ৩৬৭ জনকে শনাক্ত করা গেছে। তাঁদের চিকিৎকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আগের দিন চীন বলেছিল, সোমবার করোনার লক্ষণহীন বা উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৪১ জন। তাদের মধ্যে ২০৫ জনই বাইরে থেকে এই ভাইরাস বহন করে দেশে নিয়ে আসে। ৩০২ জন চিকিৎসাধীন কিংবা পর্যবেক্ষণে নেই। তাই গতকাল তাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের যে তথ্য দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন প্রকাশ করে, তা কতটা সঠিক, তা নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ ও সংশয় রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে কমিশন জানিয়েছে, এখন থেকে উপসর্গহীন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা তারা নিয়মিত প্রকাশ করবে। উপসর্গহীন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মঙ্গলবার শনাক্ত হয় ৩৬ জন। তাদের মধ্যে ৩৫ জনই বাইরে থেকে আসা।
চীন গত জানুয়ারিতে প্রথম দেশটিতে লোকজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করে। এ পর্যন্ত মোট ৮১ হাজার ৫৫৪ জন কোভিড–১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
চীনের উহান শহর থেকে ধীরে সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে দেশটিতে স্থানীয়ভাবে এবং সে দেশের বাইরে থেকে সংক্রমিত হয়ে ফেরা মানুষের সংখ্যা প্রকাশের জন্য সরকারের ওপর দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা চাপ দিয়ে আসছিলেন।
হুয়াশান হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের পরিচালক ঝাং ওয়েনহোং বলেন, এ পর্যন্ত যত মানুষ কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত হয়েছে, তাদের ১৮ থেকে ৩১ শতাংশের মধ্যে এ রোগের কোনো লক্ষণই ধরা পড়েনি। তবে তিনি এ–ও বলেন, উপসর্গহীন রোগীদের থেকে ব্যাপক হারে কমিউনিটিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম। তিনি আরও বলেন, চীনের বাইরে যেসব দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, সেসব দেশ থেকে আক্রান্ত হয়ে কোনো উপসর্গ না নিয়ে দেশে ফেরা ব্যক্তিদের মাধ্যমে চীনে আবার করোনার বিস্তার ঘটতে পারে।