কার্বন ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ কমানো-সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে ঐকমত্য এসেছে। গতকাল শনিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৯) ওই চুক্তিতে রাজি হয় সদস্যদেশগুলো। চুক্তিটি কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে একটি বৈশ্বিক বাজার তৈরি ও এর নিয়মনীতি নিয়ে। ওই বাজারে ‘কার্বন ক্রেডিট’ কেনাবেচা করতে পারবে দেশগুলো।
চুক্তি অনুযায়ী, বৃক্ষরোপণ ও বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো নানা প্রকল্প হাতে নেবে দরিদ্র দেশগুলো। এভাবে প্রতি এক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড বা গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর বিনিময়ে একটি ‘কার্বন ক্রেডিট’ পাবে তারা। বৈশ্বিক একটি বাজার থেকে অর্থের বিনিময়ে ওই ‘ক্রেডিট’ কিনতে পারবে বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি ‘ক্রেডিট’ কিনলে তারা এক টন কার্বন নিঃসরণের অনুমতি পাবে।
প্রায় এক দশক আগে ‘কার্বন ক্রেডিটের’ বাজার গড়ে তোলা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। এই বাজার কতটা কার্বন নিঃসরণ কমাবে এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় কতটা কাজে আসবে, তা নিশ্চিত করতে এত দিন সেই আলোচনা চলছিল। চুক্তিটির পক্ষের লোকজন বলছেন, এই চুক্তির ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়তে নিত্যনতুন প্রকল্পে শত শত কোটি ডলারের বিনিয়োগ হবে।
‘কার্বন ক্রেডিট’ বাজারের বিভিন্ন নিয়মনীতির বিষয়ে ঐকমত্যের পর আগামী বছরেই জাতিসংঘের সহায়তায় এ–সংক্রান্ত বাণিজ্য শুরু হতে পারে। বাকু সম্মেলনে ‘কার্বন ক্রেডিট’ কেনাবেচার একটি দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থা নিয়েও জোরদার আলোচনা হয়েছে। ওই ব্যবস্থায় জাতিসংঘের আওতার বাইরেও এই ‘ক্রেডিট’ সরাসরি কেনাবেচা করতে পারবে দুটি দেশ।
তবে এরই মধ্যে কিন্তু ‘কার্বন ক্রেডিটের’ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য শুরু হয়েছে। গত জানুয়ারিতে থাইল্যান্ডের কাছ থেকে ‘কার্বন ক্রেডিট’ কিনেছিল সুইজারল্যান্ড। এ ছাড়া এই ক্রেডিটের লেনদেন করতে চুক্তি করেছে আরও কয়েক ডজন দেশ। তবে ওই চুক্তিগুলোয় কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
বিশ্বে ‘কার্বন ক্রেডিট’ বেচাকেনার সমর্থন দিয়ে আসা ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ‘আইইটিএ’র ভাষ্যমতে, আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ জাতিসংঘ সমর্থিত এই বাজারমূল্য ২৫০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে। আর এই বাজারের মাধ্যমে ‘ক্রেডিট’ বেচাকেনার ফলে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমতে পারে।