বিশ্বে বসবাসের যোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান গত বছরের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছে। আগের বছর ১৬৬তম অবস্থানে থাকলেও এবার ১৬৮ নম্বরে নেমে এসেছে।
ইকোনমিস্টের প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) গতকাল বুধবার প্রকাশিত বার্ষিক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামোর মতো সূচকের আলোকে বিশ্বের ১৭৩টি শহর নিয়ে এই জরিপ করা হয়েছে।
বাসযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকার পেছানোর বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় নগর–পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খানের কাছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা শহরের যানজট, পরিবেশদূষণ, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনার তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। এখানে সব মনোযোগ অবকাঠামো নির্মাণ ও উঁচু উঁচু ভবন নির্মাণের দিকে। ঢাকা শহরে যেটুকু খালি জায়গা ছিল, সেখানেও এখন ভবন নির্মাণ হচ্ছে।
মেট্রোরেলে মনোযোগ দিলেও ঢাকার বাসসেবার মানোন্নয়ন হয়নি এবং নগর পরিবহনসেবা ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আদিল মুহাম্মদ খান। তাঁর মতে, পরিকল্পনাসংশ্লিষ্ট নগর সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীন উদ্যোগের কারণে বিভিন্ন প্রকল্পের পেছনে অনেক টাকা খরচ হলেও নাগরিক সেবার মান বাড়ছে না। সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান ঢাকা থেকে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সুবিধা নিতে চায়, কিন্তু ঢাকার বাসযোগ্যতার প্রতি মনোযোগ ও দায়বদ্ধতা নেই। ফলে ঢাকার বাসযোগ্যতা আরও তলানির দিকে যাচ্ছে।
জরিপে বিশ্বে বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় এবার নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা।
ভিয়েনার পরেই রয়েছে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ। ইআইইউর ২০২৩ সালের সবচেয়ে বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় জুরিখের অবস্থান ছিল ষষ্ঠ।
গত বছর তৃতীয় অবস্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন এবার এক ধাপ পিছিয়ে চতুর্থ অবস্থানে নেমে গেছে।
এবার কানাডার ক্যালগারি শহরের সঙ্গে যৌথভাবে পঞ্চম স্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা। কানাডার ভ্যাঙ্কুভার ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনি যৌথভাবে হয়েছে সপ্তম। জাপানের ওসাকা ও নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড হয়েছে যৌথভাবে নবম।
বসবাসযোগ্য ১৭৩টি শহরের মধ্যে ঢাকার চেয়েও পিছিয়ে রয়েছে আরও ৫টি শহর। এগুলো হচ্ছে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক, লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি, আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্স, নাইজেরিয়ার লাগোস ও পাকিস্তানের করাচি।
ইআইইউর শিল্পবিষয়ক উপপরিচালক বরশালী ভট্টাচার্য বলেন, গত এক বছরে বিশ্বে বসবাসযোগ্য শহরের মান আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু তা ধরে রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ।