কেনিয়ার একজন ধর্মপ্রচারক তাঁর অনুসারীদের যিশুর দেখা পেতে মৃত্যু পর্যন্ত অনাহারে থাকতে বলেছেন, এমন একটি কথা জানার পর তদন্ত করতে গিয়ে ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কেনিয়ার উপকূলীয় ছোট্ট শহর মালিন্দির অদূরে কবর খুঁড়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
কবর খুঁড়ে তুলে আনা এসব মরদেহের মধ্যে শিশুদের লাশও আছে। পুলিশ জানিয়েছে, আরও মরদেহ উদ্ধার হতে পারে বলে ধারণা করছে তারা।
মালিন্দির অদূরে শাকাহোলা নামে একটি বনে অগভীর এসব কবর পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে এখান থেকেই গুড নিউজ ইন্টারন্যাশনাল চার্চ নামে একটি গির্জার ১৫ সদস্যকে উদ্ধার করা হয়।
অনাহারে মৃত্যুবরণ করতে অনুসারীদের নির্দেশ দেওয়া ওই ধর্মপ্রচারকের নাম পল ম্যাকেঞ্জি। তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে কেনিয়ার পুলিশ। কেনিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম কেবিসি ধর্মপ্রচারক পল ম্যাকেঞ্জিকে ‘ধর্মীয় নেতা’ বলে বর্ণনা করছে।
এখন পর্যন্ত ৫৮টি কবর শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে একটি কবরে এক পরিবারের পাঁচজনের মরদেহ ছিল। মা-বাবা ও তাঁদের তিন সন্তানের মরদেহ ছিল ওই কবরে।
ম্যাকেঞ্জি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে আদালত তাঁকে জামিন দেননি। ম্যাকেঞ্জির দাবি, ২০১৯ সালে গির্জাটি বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।
কেনিয়ার সংবাদপত্র দ্য স্ট্যান্ডার্ড জানিয়েছে, এসব মানুষের মৃত্যু অনাহারে হয়েছে কি না, তা জানতে তাঁদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা হবে।
অনাহারে থেকে মারা গেছেন সন্দেহভাজন এমন চারজনের লাশ উদ্ধারের পর ১৫ এপ্রিল ম্যাকেঞ্জিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মালিন্দি সোশ্যাল জাস্টিস সেন্টারের ভিক্টর কাউদো স্থানীয় সিটিজেন টিভিকে বলেছেন, ‘আমরা যখন ওই বনের একটি এলাকায় একটি বড় ও লম্বা ক্রস দেখতে পাই, তখন আমাদের ধারণা হয়, এখানে পাঁচজনের বেশি মানুষকে কবর দেওয়া হয়েছে।’
দ্য স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধর্মপ্রচারক ম্যাকেঞ্জি তিনটি গ্রামকে নাজারেথ, বেথলেহেম ও জুদেয়া নামকরণ করেছিলেন। এরপর অনুসারীদের একটি পুকুরে নিয়ে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষা দেওয়ার পর তাঁদের অনাহারে থাকতে বলেন।
কেনিয়ার মানুষের মধ্যে ধর্ম পালনের হার বেশি। এর আগেও দেশটিতে এ ধরনের বিপজ্জনক, অনিয়ন্ত্রিত গির্জা অথবা ধর্মীয় বিশ্বাসের মাধ্যমে লোকজনকে প্রলুব্ধ করার ঘটনা ঘটেছে।