দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) বলেছে, তারা নতুন সরকার গঠনের জন্য অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে। গত বুধবারের সাধারণ নির্বাচনে তিন দশক পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে জোট সরকার গঠনের জন্য আজ রোববার এ কথা জানায় দলটি।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৯ দশমিক ৯১ শতাংশ ভোট গণনা সম্পন্ন হয়েছে। তাতে সিরিল রামাফোসার এএনসি ৪০ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ২০১৯ সালে দলটি সাড়ে ৫৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ভোটে এবার পিছিয়ে থাকার পরও দলটির প্রধান সিরিল রামাফোসা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। তিনি আরেক মেয়াদ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকবেন। আগামীকাল সোমবার আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করা হতে পারে। এরপর রামাফোসার জোহানেসবার্গে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এএনসির মহাসচিব ফিকিল এমবালুলা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এএনসি এমন একটি সরকার গঠনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে এবং যেটি স্থিতিশীল এবং কার্যকরভাবে শাসন করতে সক্ষম।
দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনের ফল এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে এএনসিকে সরকার গঠন করতে হলে জোট নিয়ে আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। অথবা অন্যদিকে রামাফোসাকে পুনর্নির্বাচিত করতে সরকার গঠনে অন্যদের রাজি করাতে হবে। এমবালুলা বলেন, অভ্যন্তরীণভাবে এএনসি আগামী কয়েক দিন ধরে অন্য দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবে।
এটি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য একটি ঐতিহাসিক বাঁকবদল। কারণ, দলটি বর্ণবাদের পর ১৯৯৪ সালে নেলসন ম্যান্ডেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আসছে। এমবাবুলা বলেন, এবারের নির্বাচনের ফল তাদের পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে। তাঁরা জনগণকে নিশ্চয়তা দিতে চান যে তাঁরা তাঁদের কথা শুনছেন।
অবশ্য কয়েকটি দল ভোট গণনায় অসংগতির অভিযোগ করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার নতুন দল উমখুনটো উই সিজ (এমকে)। এবারের নির্বাচনে ১৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় দল হয়েছে এমকে পার্টি। কিন্তু পুরো প্রচারণায় এমকে নেতারা সমর্থকদের বলেছিলেন, তাঁরা দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেতে চলেছেন।
এএনসি জোটের জন্য এখন যাদের কাছে যেতে পারে, তাদের মধ্যে রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ)। তারা ২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে। দলটির চেয়ারম্যান হেলেন জিল্লে বলেছেন, সব ধরনের সুযোগই তিনি রাখছেন। এমনকি এএনসিকে সরকার করতে দিতেও চান তিনি। চতুর্থ অবস্থানে থাকা বামপন্থী ইকোনমিক ফ্রিডম ফাইটার্স (ইইএফ) নেতা ও এএনসির সাবেক যুবনেতা জুলিয়াস মালেমা ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তিনি জোটে যেতে আগ্রহী হবেন। তবে এমকে পার্টি জানিয়ে দিয়েছে, রামাফোসা পদত্যাগ না করলে তারা জোটে যাবে না।