নাইজেরিয়ার গৌজা শহরে বিয়ের অনুষ্ঠান, হাসপাতাল ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আত্মঘাতী হামলা হয়েছে। গতকাল শনিবারের এ হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত ও ১৯ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছে।
জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক দশকের বেশি সময় ধরে সহিংসতা চালিয়ে আসছে। তবে ওই তিন হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে দায় স্বীকার করেনি তারা।
বর্নো রাজ্য পুলিশ বলছে, একজন আত্মঘাতী নারী হামলাকারী একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।
জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক দশকের বেশি সময় ধরে সহিংসতা চালিয়ে আসছে। তবে ওই তিন হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে দায় স্বীকার করেনি তারা।
রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র নাহুম কেনেথ দাসো বলেন, ‘শনিবার বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওই নারী এক শিশুকে পিঠে ঝুলিয়ে একটি জনাকীর্ণ মোটরপার্কে আসেন। সেখানে তাঁর শরীরে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।’
নারী আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা একই শহরের একটি হাসপাতালকেও লক্ষ্যবস্তু করেছেন। শহরটি ক্যামেরুন সীমান্তে। পরে বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলায় নিহত ব্যক্তিদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া চলাকালে আবার আত্মঘাতী হামলা হয়।
শনিবার বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওই নারী এক শিশুকে পিঠে ঝুলিয়ে একটি জনাকীর্ণ মোটরপার্কে আসেন। সেখানে তাঁর শরীরে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।নাহুম কেনেথ দাসো, বর্নো রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র
বর্নো রাজ্যের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার (এসইএমএ) তথ্য অনুসারে, এসব হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত এবং ৪২ জন আহত হয়েছেন।
সংস্থার প্রধান বারকিন্দো সাইদু বলেন, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও রয়েছেন। গুরুতর আহত ১৯ জনকে আঞ্চলিক রাজধানী মাইদুগুরির হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
গৌজা শহরে সেনাবাহিনীকে সহায়তাকারী একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর এক সদস্য বলেছেন, নিরাপত্তাচৌকাতে আলাদা হামলার ঘটনায় তাঁদের দুই সহকর্মী ও এক সেনা নিহত হয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ এ প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নাইজেরিয়ার বিভিন্ন স্থানে বোকো হারাম নিয়ন্ত্রণ হারালেও নিয়মিতভাবে গ্রাম এলাকাগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে তারা।
বোকো হারাম বারবারই আত্মঘাতী হামলায় তরুণী ও কিশোরীদের নিয়োগ করে থাকে।
২০১৪ সালে গৌজার দখল নিয়েছিল বোকো হারাম। ২০১৫ সালে নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী শহরটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়। তবে শহরটির কাছাকাছি পার্বত্য এলাকা থেকে সেখানে মাঝেমধ্যেই হামলা চালায় বোকো হারাম।
নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ।
পার্শ্ববর্তী দেশ নাইজার, ক্যামেরুন ও চাদেও সংঘাত ছড়িয়েছে। এ অবস্থায় জঙ্গিদের মোকাবিলায় তৎপর হয়ে উঠেছে দেশগুলো। একটি আঞ্চলিক সামরিক জোটও গঠন করেছে তারা।