অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বাচন স্থগিত করলেন সেনেগালের প্রেসিডেন্ট, আদালতে যাবে বিরোধীরা
সেনেগালে ২৫ ফেব্রুয়ারির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন স্থগিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাকাই সল। গতকাল শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাকাই সল। তবে কত দিন নির্বাচন স্থগিত থাকবে, তা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেননি তিনি।
কিছু বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো একে ‘ইনস্টিটিউশনাল ক্যু’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। একটি বিরোধী জোট ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, তারা প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতে যাবে।
গত জানুয়ারিতে সেনেগালের সাংবিধানিক পরিষদ নির্বাচনী তালিকা থেকে কয়েক বিশিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়। গত শুক্রবার বিরোধী দল সেনেগালিজ ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিএস) পক্ষ থেকে নির্বাচন স্থগিতের আবেদন জানানো হয়। কারণ, ওই দলের প্রার্থী করিম ওয়াদেকেও নির্বাচনী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেনেগালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নতুন কোনো তারিখ ঘোষণা করেননি। তবে তিনি বলেছেন, কীভাবে প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই করা হলো, তা-সহ অন্যান্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য একটি সংসদীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হয়, তা নিশ্চিত করতে জাতীয় পর্যায়ে সংলাপও চলছে।
এর আগে সেনেগালে কখনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন স্থগিত করার ঘটনা ঘটেনি। ডাকারের চিখ আন্তা দিওপ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক নোডিয়াক ফল রয়টার্সকে বলেন, আগামী ২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট মাকাই সলের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। তবে সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তাঁকেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বিরোধী দলের প্রার্থী খলিফা সল বলেছেন, ২ এপ্রিলের পর তিনি আর মাকাই সলকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নেবেন না। একে প্রাতিষ্ঠানিক ক্যু আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে আদালতের শরণাপন্ন হবেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে খলিফা সল বলেন, ‘আমাদের দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য আজ আমাদের বেদনা ও দুঃখ হচ্ছে।’
সেনেগালের জনগণ প্রেসিডেন্ট মাকাই সলের উত্তরসূরি বেছে নিতে ভোট দেবেন। সেনেগালের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো বিদায়ী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হচ্ছেন না। তিনি তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আমাদু বাকে বেছে নিয়েছেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য যে ২০ প্রার্থী ছাড়পত্র পেয়েছেন, তাঁদেরই একজন আমাদু।