সমকামিতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডা। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউয়ারি মুসেভিনি গত রোববার সমকামিতাবিরোধী একটি আইন কার্যকর করেছেন।
নতুন এই আইনে সমকামিতার শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর বারবার সমকামিতায় জড়ালে হতে পারে মৃত্যুদণ্ড। নতুন এই আইনের কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
গতকাল সোমবার উগান্ডা সরকার নতুন এই আইনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। প্রেসিডেন্টের দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোববার প্রেসিডেন্ট ইউয়ারি মুসেভিনি ছয়টি বিলে সই করেছেন। এর মধ্যে সমকামিতাবিরোধী বিলও রয়েছে। এর নাম অ্যান্টিহোমোসেক্সুয়ালিটি বিল ২০২৩। প্রেসিডেন্টের সই করার মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে উগান্ডার আইনপ্রণেতারা সমকামিতাবিরোধী বিলের খসড়া পাস করেন। ওই সময় বলা হয়, পশ্চিমা অনৈতিকতা থেকে উগান্ডার মূল্যবোধকে রক্ষা করার জন্য তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে যেকোনো ‘বাইরের হস্তক্ষেপ’ প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তাঁরা।
বিলটির সংশোধিত খসড়ায় বলা হয়েছে, কারও বিরুদ্ধে সমকামিতায় যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।
তবে প্রেসিডেন্ট ইউয়ারি মুসেভিনি খসড়ায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান না রাখার সুপারিশ করেছিলেন। দেশটির আইনপ্রণেতারা সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করেননি। যদিও কয়েক বছর ধরে উগান্ডায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা ঘটেনি।
কঠোর এই আইনের কড়া সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল তিনি বলেন, এই আইন ‘সর্বজনীন মানবাধিকারের দুঃখজনক লঙ্ঘন’। আইনটি প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন। বলেছেন, তা না হলে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে উগান্ডাকে দেওয়া সহায়তা এবং বিনিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আইনটির বিরুদ্ধে উগান্ডার উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে গতকাল ঘোষণা দিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড প্রমোশন ফোরাম।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, এই আইন ‘স্পষ্টভাবে অসাংবিধানিক’। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আদ্রিয়ান জুকো বলেন, সংবিধানে সমতা নিশ্চিত করা ও বৈষম্য না করার কথা বলা হয়েছে। অথচ আমরা প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সম্মতিমূলক সমকামী কার্যকলাপকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করছি।