সুদানে একটি বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও অনেকে নিখোঁজ। স্থানী গণমাধ্যমের বরাতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত রোববার রাতে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ভারী মৌসুমি বৃষ্টির কারণে শনিবার রাতে পোর্ট সুদান শহরের উত্তর দিকের আরবাত বাঁধ ভেঙে যায়। এতে বন্যা দেখা দেয়। চারজনের মৃত্যু হয়। অনেক বাড়িঘর ভেসে যায়।
কিন্তু স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে নাইজেরিয়ার দৈনিক আল-তাগির ও মেদামিক জানায়, মৃত মানুষের সংখ্যা এরই মধ্যে অন্তত ৬০–এ পৌঁছেছে।
জাতিসংঘ বলছে, এখনো অনেকে নিখোঁজ। বন্যায় ২০টি গ্রাম ধ্বংস হয়েছে। ৫০ হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরবাত বাঁধটি পোর্ট সুদান শহরের পানির মূল উৎস। লোহিত সাগরের তীরবর্তী শহরটি বর্তমানে দেশটির প্রশাসনিক রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কারণ, মূল রাজধানী খার্তুমে যুদ্ধ চলছে।
দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) যুদ্ধ হচ্ছে। যুদ্ধের কারণে উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে।
আরবাত সুদানের অনেকগুলো বাঁধের একটি। এসব বাঁধ দেশটির বন্যার পানি ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করে। পোর্ট সুদান শহরের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণের আরবাত বাঁধের অববাহিকায় নীল নদের ওপরের দুটি শাখা মিলিত হয়েছে।
গত জুন মাসের শেষ থেকে সুদানে ভারী বৃষ্টি ও বন্যা হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবিক কার্যক্রম সমন্বয় দপ্তরের (ওসিএইচএ) তথ্যমতে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সুদানের ১৬টির রাজ্যে প্রায় ৩ লাখ ১৭ হাজার মানুষ (৫৬ হাজার ৪৫০ পরিবার) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর দারফুর, নীল নদ ও পশ্চিম দারফুর রাজ্য।
গতকাল সোমবার সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জুন থেকে শুরু হওয়া বন্যায় দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যুদ্ধের ফলে সুদানে আগে থেকেই মানবিক সংকট চলছিল। ভারী বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল করল। খাদ্যসংকটে থাকা দেশটিতে সম্প্রতি কলেরার প্রাদুর্ভাবও দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা দূষিত হওয়ায় সেখানে কলেরা ছড়িয়ে পড়ছে।