লিবিয়ায় বন্যায় বাঁধ ভেঙে চার হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। গত বছরের সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনায় এসব কর্মকর্তাকে ৯ থেকে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা জানিয়েছেন।
বাঁধধসের ওই বিপর্যয়কর ঘটনায় দেরনা শহরের কয়েকটি এলাকা পানির তোড়ে পুরোপুরি ভেসে যায়। তখন উদ্ধারপ্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল।
দণ্ডিত সরকারি কর্মকর্তারা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং ওই বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, পরিকল্পিত খুন এবং জনগণের অর্থ অপচয়ের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
বিবাদীদের তিনজনকে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থও ফেরত দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, লিবিয়ায় এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের সময় দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার কারণে বাঁধগুলোর পানি ধরে রাখার সক্ষমতা কিছুটা কমে যায়।
দেরনায় এই বিপর্যয় আঘাত হানার এক সপ্তাহ পর বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা শহরের মেয়রের বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেন। তাঁরা এমন বিপর্যয়ের জবাবদিহি দাবি করেন। তখন পুরো নগর পর্ষদই বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
ওই বন্যার কয়েক দিন পর বাসিন্দারা বিবিসি অ্যারাবিককে বলেছিলেন, বন্যার সময় দেরনার কম ঝুঁকিপূর্ণ অংশের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। সরিয়ে নেওয়া লোকজন কোথাও আশ্রয় নেবেন, সে বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বাসিন্দারা আরও বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কিছু লোককে উপকূল থেকে সরিয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নেওয়া হয়েছিল। সেসব এলাকা পরে প্লাবিত হয়।
ঘূর্ণিঝড় দানিয়েলের প্রভাবে লিবিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় ২৪ ঘণ্টায় ৪০০ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টি হয়। এতে ওই বন্যা দেখা দেয়। পুরো সেপ্টেম্বর মাসে সাধারণত ওই এলাকায় দেড় মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে থাকে। ফলে এমন বৃষ্টিতে ওই এলাকায় নজিরবিহীন প্লাবন দেখা দেয়।