আফ্রিকার দেশ নাইজারের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির অভ্যুত্থানপন্থী সামরিক নেতারা।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নাইজারের আকাশে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে। বিদেশি হস্তক্ষেপের আশঙ্কায় দেশটিতে ক্ষমতা দখল করা সামরিক নেতারা এই নির্দেশ দিয়েছেন।
উড়োজাহাজ চলাচল শনাক্তকারী ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ জানিয়েছে, বর্তমানে নাইজারের আকাশসীমায় তারা কোনো উড়োজাহাজের অবস্থান শনাক্ত করতে পারেনি।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জোট দ্য ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) আলটিমেটাম দিয়েছিল, স্থানীয় সময় গতকাল রোববারের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে না দিলে জোটভুক্ত দেশগুলো নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপ করবে।
ক্ষমতা হস্তান্তরের আলটিমেটামের সময়সীমা পার হওয়ার আগে নাইজারের অভ্যুত্থানপন্থী সামরিক নেতারা দেশটির আকাশসীমা বন্ধ করে দিলেন। জান্তার মুখপাত্র বলেছেন, নাইজারের সশস্ত্র বাহিনী দেশ রক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে।
নাইজারে গত ২৬ জুলাই অভ্যুত্থান ঘটে। এতে নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের সদস্যরা। অভ্যুত্থানের পর নাইজারের প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের প্রধান আবদোরাহমানে চিয়ানি নিজেকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ঘোষণা করেন।
অভ্যুত্থানের সময় পদচ্যুত করা হয় নাইজারের প্রেসিডেন্ট বাজোমকে। এর পর থেকে রাজধানী নিয়ামের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বন্দী রয়েছেন তিনি। ২০২১ সালে নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন তিনি। বাজোম পশ্চিমাপন্থী হিসেবে পরিচিত। নাইজারের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছেন তিনি।
বাজোমকে হটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার ঘটনা ভালোভাবে নেয়নি পশ্চিমারা। কেননা যুক্তরাষ্ট্র ও একসময় নাইজারে উপনিবেশ স্থাপন করা ফ্রান্স এত দিন মোহাম্মদ বাজোমকে সরাসরি সহায়তা করে আসছিল। নাইজারে এই দুই দেশের সেনাঘাঁটি রয়েছে। অভ্যুত্থানের পর বাজোমের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশ দুটি। বাজোমের মুক্তি চেয়েছে ইইউ, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ।
নাইজারের পরিস্থিতি নিয়ে গত শুক্রবার নাইজেরিয়ায় বৈঠকে বসেছিলেন ইকোওয়াসভুক্ত দেশগুলোর সেনাপ্রধানেরা। ওই বৈঠক থেকে নাইজারের অভ্যুত্থানপন্থী নেতাদের আলটিমেটাম ও হস্তক্ষেপের হুমকি দেওয়া হয়। নাইজেরিয়া, ঘানা, সেনেগালসহ ১৫টি দেশ আঞ্চলিক এই জোটের সদস্য।