দক্ষিণ আফ্রিকায় সাধারণ নির্বাচনে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ ভোটকেন্দ্রের গণনা শেষ হয়েছে। এতে ৪০ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছে ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় এএনসির তিন দশকের একক আধিপত্যের অবসান হতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচন কমিশন বলেছে আগামীকাল রোববার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
গত বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকায় সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। ভোট গণনা এখন প্রায় শেষের দিকে। আজ সকালে ৯৮ শতাংশ কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে দেখা গেছে, প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। আর ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার দল উমখুনটো উই সিজ (এমকে)।
এএনসি এগিয়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে বলা যায়, ৩০ বছরে এই প্রথমবারের মতো দলটি ৫০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করতে পারছে না। আর তাহলে জোট সরকার গঠনের জন্য তাদের বিরোধী দলগুলোকে কাছে টানতে হবে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনে জ্যাকব জুমার দল উমখুনটো উই সিজ (এমকে) উল্লেখজনক সাফল্য পেয়েছে, তা বলাই যায়। এটি এমন কিছু জায়গায় জয়ী হয়েছে, যা একসময় এএনসির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। দলটি কোয়াজুলু নাটালে খুব সহজেই জয়ী হতে যাচ্ছে। এটি এমন এক প্রদেশ, যেখানে ১৯৯৪ সাল থেকে এএনসি কখনো পরাজিত হয়নি।
সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশে ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আবারও ক্ষমতায় ফিরছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। শুধু কোয়াজুলু নাটাল ও ওয়েস্টার্ন কেপই নয়, গাওতেং প্রদেশেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে এএনসি। গাওতেংয়ের মতো কিছু প্রদেশে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এএনসিকে জোট করতে হবে।
রাজনীতি-বিশ্লেষক সিজ মোপোফু-ওয়ালশ মনে করেন, এই ফলাফলের মধ্য দিয়ে ইঙ্গিত মিলছে যে ‘এএনসির আধিপত্যের সমাপ্তি’ ঘটতে যাচ্ছে। আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা ভালো। যতটা আশা, ততটা ভয়ও থাকা উচিত। কী ঘটতে যাচ্ছে, মানুষ উদ্বিগ্ন ও অনিশ্চিত। এর মধ্য দিয়ে পরিবর্তন ও জবাবদিহির নতুন পথ খুলবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনামল অবসানের পর ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বাধীন এএনসি জয়লাভ করে। এরপর পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৩০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে এএনসি। তবে ক্ষমতা ধরে রাখলেও ধারাবাহিকভাবেই এএনসির ভোট কমছিল। সর্বশেষ ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৫৭ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পায় এএনসি।