কেনিয়ার একটি স্কুল ছাত্রাবাসে আগুন লেগে অন্তত ১৭ শিক্ষার্থী মারা গেছে। গুরুতর আহত হয়েছে ১৬ জন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের গড় বয়স ৯ বছর। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের দিকে ছাত্রাবাসটিতে আগুন লাগে। শুক্রবার স্থানীয় পুলিশ ও কেনিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কেনিয়ার মধ্যাঞ্চলের নয়েরি কাউন্টির হিলসাইড এন্দারাশা একাডেমি নামের প্রাথমিক বিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮২৪। এর মধ্যে ছেলে ৪০২ জন। মেয়ে ৪২২ জন। শিক্ষার্থীদের বয়স ৫ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রাবাসে থাকে ৩১৬ জন। বাকিরা বাসা থেকে আসা-যাওয়া করে। বৃহস্পতিবার ছেলেদের যে ছাত্রাবাসটিতে আগুন লাগে, তাতে ১৫৬ জনের থাকার ব্যবস্থা ছিল।কেনিয়ার জাতীয় পুলিশের মুখপাত্র রেসিলা ওনিয়াঙ্গো বলেন, ‘আগুনের ঘটনায় ১৭ জন মারা গেছে। গুরুতর আঘাত নিয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার পুড়ে যাওয়া মরদেহগুলো শনাক্ত করার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ হলে উদ্ধার মরদেহের সংখ্যা বাড়তে পারে।’
আগুন লাগার কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে আগুনের কারণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে উইলিয়াম রুটো লেখেন, ‘আগুনের শোকাবহ ঘটনায় যেসব শিশু প্রাণ হারিয়েছে তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। এটা একটি ভয়ানক খবর। আমরা এ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চাই। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
কেনিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের স্কুলে অতীতেও বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ২০১৬ সালে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির পার্শ্ববর্তী কিবেরায় নারীদের একটি উচ্চবিদ্যালয়ে আগুনে ৯ শিক্ষার্থী মারা গিয়েছিল।
২০০১ সালে কেনিয়ার দক্ষিণ মাচাকোস জেলার কিয়াঙ্গুলি মিক্সড সেকেন্ডারি স্কুল ডেভিড মুতিসোর একটি ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৬৭ শিক্ষার্থী মারা গিয়েছিল। এই ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। স্কুলটির প্রধান ও উপপ্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
১৯৯৪ সালে পূর্ব আফ্রিকার আরেক দেশ তানজানিয়ার কিলিমাঞ্জারোর উত্তরাঞ্চলের শৌরিটাঙ্গা সেকেন্ডারি স্কুল ফর গার্লসে আগুন লেগে ৪০ জন শিক্ষার্থী জীবন্ত পুড়ে মারা গিয়েছিল। আহত হয়েছিল ৪৭ জন।