আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে তিন দিন ধরে রক্তক্ষয়ী লড়াই চলছে। এ থেকে বাদ যায়নি বিদেশি কূটনীতিকেরাও। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের একটি গাড়িবহর লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭-এর বৈঠকে অংশ নিতে এখন জাপানে রয়েছেন ব্লিঙ্কেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ব্লিঙ্কেন বলেন, সুদানে সংঘটিত ঘটনাটি ছিল বেপরোয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অবশ্যই অনিরাপদ। ব্লিঙ্কেন আরও জানান, গতকাল সোমবারের এই গুলির ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
এর আগে সুদানের রাজধানী খার্তুমে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক আইদেন ও’হারা লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে এই কূটনীতিক গুরুতর আঘাত পাননি বলে নিশ্চিত করেন আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখায়েল মার্টিন।
এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদানে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। এ জন্য তিনি দেশটিতে বিবদমান দুই জেনারেলের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
পরে টুইট বার্তায় ব্লিঙ্কেন বলেন, সুদানে ইতিমধ্যে অনেক বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটিতে অবস্থানরত কূটনৈতিক ও সাহায্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি অবিলম্বে বৈরিতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল বলেছেন, আরও সংঘাত সুদান ও অঞ্চলটির জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
মূলত ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চলছে সুদানে। এই দ্বন্দ্ব থেকে শুরুতে উত্তেজনা, পরে তা গত শনিবার সংঘাতে রূপ নেয়। চলমান সংঘাতের এক পক্ষে রয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। অপর পক্ষে আছেন আরএসএফের প্রধান সাবেক মিলিশিয়া নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। এই দুই জেনারেল ২০২১ সালে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদানের ক্ষমতা দখল করেছিলেন।
সুদানে জাতিসংঘ মিশনের প্রধান ভলকার পার্থেস গতকাল নিরাপত্তা পরিষদকে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জানিয়েছেন, উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে কমপক্ষে ১৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ১ হাজার ৮০০ জন। রাজধানী খার্তুমের যে লড়াই, তা নজিরবিহীন। এ লড়াই দীর্ঘায়িত হতে পারে।