সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ
সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ

সুদানে সেনা অভ্যুত্থানের জেরে সহায়তা স্থগিত করল বিশ্বব্যাংক

সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিকে দেওয়া অর্থসহায়তা স্থগিত করেছে বিশ্বব্যাংক। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত সোমবার সুদানে সেনা অভ্যুত্থান হয়। এ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির বেসামরিক সরকার উৎখাত করে সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভেঙে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদকসহ মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজধানী খার্তুমের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।

সুদানে সামরিক অভ্যুত্থান নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস। তিনি বলেন, ‘সুদানের সাম্প্রতিক ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমি আশঙ্কা করছি, এ ঘটনা দেশটির সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি উন্নয়নে নাটকীয় প্রভাব ফেলতে পারে।’

চলতি বছরের মার্চে বিশ্বব্যাংক থেকে বিশাল অঙ্কের আর্থিক সহায়তা পায় সুদান। এর আগে প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের কোনো সহায়তা পায়নি দেশটি।
সে সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক জানিয়েছিলেন, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা মিলেছে। সুদানের কৃষি, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের জন্য এ অর্থ পাওয়া যায়।

গত মাসে বিশ্বব্যাংকে দেওয়া এক বক্তব্যে আবদাল্লাহ হামদক বলেছিলেন, ইতিমধ্যে সহায়তার ফল পাওয়া শুরু করেছে সুদান। তবে বিশ্বব্যাংকের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশটি আবার অর্থনৈতিক ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

সুদানে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। দেশটির সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে সুদানের সদস্যপদ স্থগিত করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। দেশটিতে বেসামরিক সরকার পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত এই সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে এইউ। সুদানকে দেওয়া ৭০ কোটি ডলারের সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সুদানের সেনাবাহিনী। এরপর ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেশটি শাসন করছিল সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক সরকার। গত সেপ্টেম্বরে বশিরের অনুসারীদের একটি অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে দেশটিতে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ে। সর্বশেষ সোমবার দেশটির শাসনক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। সেনাশাসনের বিরোধিতায় রাজপথে নামেন দেশটির বহু মানুষ।