সুদানে সেনাবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ, ধরপাকড়

সুদানে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ
ফাইল ছবি: এএফপি

সুদানে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘাতে আহত হয়েছে ৫৮ পুলিশ। বিক্ষোভ দমাতে ধরপাকড় শুরু করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আটক হয়েছেন ১১৪ জন। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সুদানের পুলিশ বাহিনী।  

সেনা অভ্যুত্থানের দুই মাস পূর্তি উপলক্ষে স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার রাজধানী খার্তুমের পথে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। তাঁরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা সেনাদের ব্যারাকে ফিরে যাওয়ার স্লোগান দেন। বেসামরিক সরকারের কাছে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি তোলেন।

দেশটির পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সেখানকার হাসপাতালে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে এই বিক্ষোভে ঠিক কতজন আহত হয়েছেন, তা জানা যায়নি। সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির পুলিশ এক বিবৃতিতে তাদের ৫৮ জন সদস্যের আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে। এদিন বিক্ষোভ হয়েছে সুদানের বিভিন্ন শহরেও।

খার্তুমে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন ৩১ বছরের ওথম্যান মুস্তাফা। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু সেনাশাসনের প্রত্যাহার চাই না। বরং আমরা আমাদের মনের মতো সুদান চাই। আমাদের চাহিদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে, এমন সরকার চাই।’ সুদানের গণতন্ত্রকামী চিকিৎসকদের কমিটি জানিয়েছে, দুই মাস ধরে চলা বিক্ষোভে সুদানে অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আফ্রিকার দেশ সুদানে গত ২৫ অক্টোবর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। তবে দেশি-বিদেশি চাপের মুখে গত ২১ নভেম্বর তিনি সুদানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদকের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেন। এর মাধ্যমে দেশটিতে বেসামরিক সরকার ফিরিয়ে আনার কথা ছিল।

২০২৩ সালের জুলাইয়ে পরবর্তী নির্বাচন আয়োজনের সমঝোতা হয়। কিন্তু ওই চুক্তি সইয়ের এক মাস পেরোলেও ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি জেনারেল আল-বুরহান। অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটিতে গণতন্ত্রের দাবিতে ও সমঝোতার বিরোধিতা করে বিক্ষোভ চলছে।

উল্লেখ্য, টানা তিন দশক ক্ষমতায় থাকার পর ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সুদানের সেনাবাহিনী। এর পর থেকে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেশটিতে শাসন করছিল সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক সরকার।