সুদানে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আরও অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী। এক মাস ধরে সুদানে হাজারো মানুষ সামরিক শাসনের বিরোধিতায় বিক্ষোভ করছেন। গতকাল বুধবার ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন। চিকিৎসকদের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
২৫ অক্টোবর সুদানের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করে রাষ্ট্রক্ষমতার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর পর থেকেই দেশটির রাজধানী খার্তুমসহ বাহরি ও ওমদুরমান শহরে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা সম্পূর্ণ রাষ্ট্রক্ষমতা বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে অর্পণ এবং সাম্প্রতিক ওই অভ্যুত্থানের নেতাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল বিক্ষোভের সময় তিন শহরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী সরাসরি গুলি এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। মুঠোফোনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি পুলিশ ও বিক্ষোভকারী আহত হওয়ার কথা জানালেও নিহত হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানায়নি।
সুদানের চিকিৎসকদের কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছে, অভ্যুত্থানকারী সেনারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকভাবে সরাসরি গুলি চালায়। গুলিতে ১০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। বাহরি শহরেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এই গোষ্ঠী।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, এর প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওমদুরমান শহরের একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘মানুষ এখন শুধু আতঙ্কিত।’ এর আগে খার্তুমের একটি প্রধান সড়কে বিক্ষোভকারীরা টায়ার জালিয়ে স্লোগান দেন, ‘মানুষ বেশি শক্তিশালী, পিছু হটা অসম্ভব’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় পোস্ট হওয়া ছবিতে পোর্ট সুদান, কাসসালা, ডাঙ্গোলা, ওয়াদ মাদানি ও জেনেইনার মতো ছোট শহরেও বিক্ষোভ হতে দেখা গেছে। দেশটির প্রধান সব সড়ক ও মোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নীল নদের পাশের সব সেতু।
সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে নতুন জাতীয় পরিষদ গঠন করা হয়েছে। এর প্রধান হয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। ইতিমধ্যে সরকার ভেঙে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদকসহ মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।