শিক্ষার্থী অপহরণে নাইজেরিয়ার এক রাজ্যের সব আবাসিক স্কুল বন্ধ

নাইজেরিয়া সরকার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য জামফারার সব আবাসিক স্কুল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। বন্দুকধারীরা সেখানকার একটি স্কুলের ৩১৭ ছাত্রীকে অপহরণের প্রেক্ষাপটে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে গত সপ্তাহে নাইজার রাজ্যের একটি আবাসিক স্কুল থেকে অপহরণের শিকার ২৭ ছাত্রসহ ৪২ জনকে আজ শনিবার মুক্তি দিয়েছে বন্দুকধারীরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

নাইজেরিয়ার কাগারা শহরের সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ৪২ জনকে অপহরণ করেছিল বন্দুকধারীরা। অপহরণের সময় আবাসিক ভবনের নিচতলায় পড়ে ছিল এক শিক্ষার্থীর কাপড়
ছবি: রয়টার্স

জামফারায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওই ৩১৭ ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বন্দুকধারীরা। জামফারার গভর্নর বেল্লো মাতওয়ালে বলেন, ‘আমি ভুক্তভোগীদের মুক্ত করতে সম্ভব প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার নিশ্চয়তা অভিভাবকের দিতে চাই।’
জামফারা রাজ্যের তথ্য কমিশনার সুলেয়মান তানাউ আনকা বলেন, সেখানকার জাঙ্গেবে গ্রামের সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে ৩১৭ ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় অজ্ঞাতনামা বন্দুকধারীরা। বিবিসিকে এক শিক্ষক বলেন, স্কুলে ওই সময় ৪২১ জন শিক্ষার্থী ছিল। তাদের মধ্যে ৫৫ জন বাদে সবাইকে অপহরণ করা হয়েছে।

এর আগে নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলের রাজ্য নাইজারের কাগারা শহরের সরকারি বিজ্ঞান কলেজে ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে আক্রমণ করে বন্দুকধারীরা। তারা ওই আবাসিক কলেজের ২৭ শিক্ষার্থী, ৩ শিক্ষক ও শিক্ষক পরিবারের ১২ সদস্যকে তুলে নেয়। সে সময় তাদের গুলিতে এক শিক্ষার্থী প্রাণও হারায়। এরপর তাদের উদ্ধারে যাওয়া সামরিক বাহিনীর একটি বিমান ২১ ফেব্রুয়ারি বিধ্বস্ত হয়। ওই দুর্ঘটনায় সাত সেনা কর্মকর্তা প্রাণ হারান।

নাইজেরিয়ার কাগারা শহরের সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শ্রেণিকক্ষ

মুক্তিপণের জন্য নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বন্দুকধারীরা নিয়মিত অপহরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। দুই মাস আগেও দেশটির উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কাটসিনায় তিন শতাধিক স্কুলছাত্রকে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে সরকার অপহরণকারীদের সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে তাদের মুক্ত করে আনে।

দস্যুরা নাইজেরিয়ায় রুগু জঙ্গলে নিজেদের গোপন আস্তানা গড়ে তুলেছে। এই জঙ্গল দেশটির জামফারা, কাটসিনা, কাদুনা ও নাইজার রাজ্যকে ছুঁয়েছে। এসব স্থানে সেনা মোতায়েন করা হলেও দস্যুদের আক্রমণ অব্যাহতই রয়েছে। সাধারণত এই অপরাধী চক্র অর্থের জন্য লোকজনকে অপহরণ করে থাকে, তাদের কোনো আদর্শিক লক্ষ্য নেই। তবে তাদের মধ্যে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ক্রিয়াশীল জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে নিরাপত্তা বিভাগ।