রুয়ান্ডায় গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত দেশটির সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল থিওনেস্টে বাগোসোরা মালির একটি কারাগারে মারা গেছেন। আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
মৃত্যুকালে বাগোসোরার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তাঁকে ১৯৮৪ সালে সংঘটিত রুয়ান্ডার গণহত্যার মূল হোতা হিসেবে অভিহিত করা হয়। ওই গণহত্যায় লাখো মানুষ প্রাণ হারায়।
গণহত্যার সময় বাগোসোরা রুয়ান্ডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন। জাতিসংঘ-সমর্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে তাঁর সাজা কমিয়ে ৩৫ বছরের কারাদণ্ড করা হয়।
বাগোসোরার ছেলে বিবিসিকে বলেছেন, তাঁর বাবা মালির বামাকোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি হৃদ্রোগসংক্রান্ত জটিলতার চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
রুয়ান্ডায় ১৯৯৪ সালে সংঘটিত ১০০ দিনের গণহত্যায় প্রায় ৮ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়, যাদের বেশির ভাগই ছিল তুতসি জাতিগোষ্ঠীর সদস্য।
১৯৯৪ সালের ৬ এপ্রিল রুয়ান্ডার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জুভেনাল হাবিয়ারিমানাকে বহনকারী উড়োজাহাজ গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। এতে উড়োজাহাজে থাকা সব আরোহী নিহত হন। এই ঘটনার জেরে রুয়ান্ডায় গণহত্যা শুরু হয়।
গণহত্যার ঘটনার দুই বছর পর ক্যামেরুনে গ্রেপ্তার হন বাগোসোরা। সেখানে তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন।
রুয়ান্ডায় গণহত্যার ঘটনায় গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০০৮ সালে বাগোসোরারকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেন। প্রথমে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিন বছর পর কিছু অভিযোগ বাতিল করা হয়। এ পর্যায়ে তাঁর সাজার মেয়াদ কমিয়ে ৩৫ বছরের কারাদণ্ড করা হয়।
বিচারকালে বাগোসোরা দাবি করেন, তিনি রুয়ান্ডার তুতসি জাতিগোষ্ঠীপ্রধান সরকারের প্রচারণার শিকার।
রুয়ান্ডায় সংঘটিত গণহত্যার সময় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রধান ছিলেন কানাডার জেনারেল রোমিও ডালেয়ার। তাঁর ভাষ্য, রুয়ান্ডার গণহত্যার পেছনের মূল হোতা ছিলেন বাগোসোরা। এমনকি সাবেক এই কর্নেল তাঁকে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিলেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বাগোসোরার আগাম মুক্তির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়। আর ৯ বছর তাঁর সাজা ভোগ করার কথা ছিল। তিনি মালির কারাগারে সাজা ভোগ করছিলেন।