মোজাম্বিকের উত্তরাঞ্চলের পালমা শহরে জঙ্গি হামলায় বেশ কয়েকজন মানুষ নিহত হয়েছেন। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে হামলার কারণে স্থানীয় এক হোটেলে আটকে পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজন নিহত হয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত বুধবার থেকে পালমা শহরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষ চলছে। এ সময় স্থানীয় এক হোটেলে আটকা পড়েন কয়েকজন শ্রমিক। সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টার সময় সেনাবাহিনীর গাড়িতে গুলি চালায় জঙ্গিরা। এ ঘটনায় দক্ষিণ আফ্রিকার এক নাগরিকসহ মোট সাতজনের মৃত্যু হয়। অবশ্য স্থানীয় ও বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকা ব্যবহার করে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, একটি নৌকায় করে গতকাল রোববার বিকেলে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনকে বন্দর শহর পেম্বায় নিয়ে আসা হয়। পালমা থেকে এই শহর প্রায় আড়াই শ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
২০১৭ সাল থেকেই মোজাম্বিকের উত্তরাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা চলছে। প্রায়ই ওই অঞ্চলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব সংঘাতে ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আড়াই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর উদ্বাস্তু হয়েছে প্রায় সাত লাখ মানুষ। অভিযোগ আছে, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জঙ্গিরা এসব সংঘাতের জন্য মূলত দায়ী।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, পালমা শহরে থাকা অধিবাসীরা উদ্ধার অভিযানে প্রয়োজনীয় সহায়তা করেছে। তবে জঙ্গিদের হামলার ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে উপযুক্ত সময়ে সাড়া দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ আছে অনেকের।
এদিকে পালমা শহরের কাছেই একটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। বর্তমানে তা আছে ফরাসি কোম্পানি ‘টোটাল’-এর নিয়ন্ত্রণে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এরই মধ্যে সংঘর্ষের কারণে কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সংঘর্ষে তাদের কোনো কর্মী মারা যাননি। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে মোজাম্বিকের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আস্থা থাকার কথাও জানিয়েছে টোটাল।