দক্ষিণ আফ্রিকায় দাঙ্গায় নিহত বেড়ে ৭২

দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান দাঙ্গা, বিক্ষোভ ও লুটপাটের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। সেখানকার প্রশাসন বলছে, বিভিন্ন অপরাধীরা এ পরিস্থিতিতে সুযোগ নিচ্ছে। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার।

জ্যাকব জুমার কারাভোগকে কেন্দ্র করে গত পাঁচ দিন ধরে দাঙ্গা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৩ জুলাই।
ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এক বিবৃতিকে জানিয়েছে, জোহানেসবার্গসহ বিভিন্ন শহরে গত পাঁচ দিনের সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন করেছেন প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা।

পুলিশ ওই বিবৃতিতে জানায়, তারা ১২ ব্যক্তিকে দাঙ্গার সন্দেহভাজন উসকানিদাতা বলে চিহ্নিত করেছেন। দাঙ্গা, লুটপাট ও সহিংসতার অভিযোগে ইতিমধ্যে এক হাজার ২৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সন্দেহভাজন লুটপাটকারীদের কয়েকজনকে আটকের পর মাটিতে শুইয়ে রেখেছে পুলিশ। জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৩ জুলাই।

প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা চলমান পরিস্থিতিকে তাঁর দেশে ১৯৯০ সালের পর থেকে হওয়া সহিংসতাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য বলে আখ্যা দেন। চলমান সহিংসতায় অগ্নিসংযোগ, মহাসড়ক অবরোধ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গুদাম ঘর লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে এই পরিস্থিতি জ্যাকব জুমার নিজের প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতালের প্রধান প্রধান শহরগুলো থেকে শুরু করে ছোট ছোট শহরগুলোর। একই অবস্থা বিরাজ করছে গুতেং প্রদেশেও।

১৫ মাসের কারাদণ্ডাদেশ পাওয়ার পর গত বুধবার পুলিশে ধরা দেন জ্যাকব জুমা (৭৯)। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত অবমাননার দায়ে গত ২৯ জুন জুমাকে এই কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই ঘটনার পর তাঁর নিজ প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতালে (কেজেডএন) বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।

জ্যাকব জুমার কারাভোগকে কেন্দ্র করে গত পাঁচ দিন ধরে দাঙ্গা, বিক্ষোভ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৩ জুলাই।

২০১৮ সালে জ্যাকব জুমাকে ক্ষমতাচ্যুত করা বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এক বিবৃতিতে বলেন, যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় পূর্ণ আইনি শক্তি প্রয়োগ করা হবে।

ক্ষমতায় থাকাকালেই জুমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তদন্ত করছিলেন উপপ্রধান বিচারপতি রেমন্ড জোনডো। সেই তদন্তের জন্যই গত ফেব্রুয়ারিতে তলব করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তিনি আদালতে হাজির হননি। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত জুমার এই আচরণকে আদালত অবমাননা হিসেবে রায় দিয়েছেন।