পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনিতে ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণে কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, পাঁচজনের শরীরে ইবোলা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। ২০১৬ সালের পর এই প্রথম দেশটিতে ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
গিনির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, একটি শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পর আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডায়রিয়া, বমি ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা মহামারিতে ১১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। এ ভাইরাসের উদ্ভব হয়েছিল গিনি থেকে। ২০১৪ সালে এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়ায় ইবোলা ভাইরাস। এই ভাইরাস গিনি, লাইবেরিয়া, সিয়েরা লিয়নসহ কয়েকটি দেশে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
১৯৭৬ সালে প্রথম শনাক্ত হয় ইবোলা ভাইরাস। মধ্য আফ্রিকার ইবোলা নদীর তীরে প্রথম সংক্রমণ ঘটে বলে নদীটির নামেই ভাইরাসটির নামকরণ হয়। ইংরেজিতে রোগটির নাম দেওয়া হয়েছে ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ বা ইভিডি। বলা হচ্ছে, বাদুড়ের খাওয়া ফল থেকে এ ভাইরাস মানুষের দেহে প্রথম প্রবেশ করে। পরে তা মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে শুরু করে। দেহ থেকে নিঃসৃত বিভিন্ন তরল থেকে এ রোগ ছড়ায়।
তবে আশার কথা হচ্ছে, গিনির ইবোলা মহামারির পর থেকে বেশ কয়েকটি টিকা তৈরি করা হয়েছে। কঙ্গোতে মহামারি ঠেকাতে এ টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইবোলায় আক্রান্ত প্রাণী যেমন শিম্পাঞ্জি, বাদুড় ও হরিণজাতীয় প্রাণী থেকে মানুষ সংক্রমিত হতে পারে। এরপর মানুষের কাছ থেকে সংক্রমিত রক্ত, শরীর থেকে বের হওয়া তরল বা সংক্রমিত পরিবেশ থেকে এটি ছড়িয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ইবোলায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর অত্যন্ত সংক্রামক। সংক্রমিত হলে উপসর্গ দেখা দিতে দুই দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত লাগে।
গিনির জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সাকোবা কেইতা বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের আলাদা করা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক মাতশিহিদো মোয়েতি টুইট করে বলেছেন, গিনিতে ইবোলার সম্ভাব্য ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
২০১৫ সালে গিনিতে চার মাসের জন্য ইবোলার টিকা পরীক্ষা করা হয়। ওই টিকা তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি মের্ক শার্প অ্যান্ড ডোহমি (এমএসডি)।