অ্যাসাঞ্জের নাগরিকত্ব বাতিল করল ইকুয়েডর

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
 ফাইল ছবি: রয়টার্স

মার্কিন গোপন নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দেওয়া ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে ইকুয়েডর। গ্রেপ্তার ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ এড়াতে ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যে ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। ২০১৯ সালে তাঁকে যুক্তরাজ্যের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডরের কর্তৃপক্ষ। এখন সেখানে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।

ইকুয়েডরের কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে অ্যাসাঞ্জকে জানিয়ে দিয়েছে, তাঁর করা নাগরিকত্বের আবেদন অসংগতিপূর্ণ। একাধিক অসংগতির মধ্যে রয়েছে সইয়ে মিল না থাকা, ফি পরিশোধ না করা প্রভৃতি। এসব কারণে অ্যাসাঞ্জের নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইকুয়েডরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা চিঠিতে অ্যাসাঞ্জকে জানিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ। আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

এই বিষয়ে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী কার্লোস পোভেদা বলেন, সঠিক নিয়ম মেনে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এমনকি বিচারকালে হাজির হওয়ার অনুমতি পাননি অ্যাসাঞ্জ। তিনি তাঁর মৌলিক স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বন্দী জীবনে তাঁর স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।

কার্লোস পোভেদা আরও বলেন, অ্যাসাঞ্জের নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি নাগরিকত্বের গুরুত্বের চেয়েও বেশি কিছু। এটা অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের শামিল। তাই বাতিল করতে হলে সেটা যথাযথ নিয়ম মেনে করা উচিত।

অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত চরবৃত্তির আইনে করা মামলার আসামি। ২০১০ সালে আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন সেনাবাহিনীর অভিযান সম্পর্কিত গোপন নথি তিনি ফাঁস করে দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে সুইডেনে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাও করা হয়।

অ্যাসাঞ্জ ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ইকুয়েডরের নাগরিকত্ব পান। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা সুইডেনে প্রত্যর্পণ এড়াতে অ্যাসাঞ্জ টানা সাত বছর লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে কাটিয়ে দেন। এর পর ২০১৯ সালের এপ্রিলে তাঁকে আটক করে লন্ডন পুলিশ।

শুরু থেকেই অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ করে আসছে ওয়াশিংটন। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের নিম্ন আদালত যুক্তরাষ্ট্রের এমন অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট জানান, নিম্ন আদালতের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র আপিল করতে পারবে।