জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সতর্ক করে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা, খরা, ঝড়, দাবানল বাড়ছে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মানবজাতির অর্ধেক চরম বিপদে রয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের অভ্যাস বদলাতে না পারলে কোনো দেশই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবে না।
জার্মানির বার্লিনে জাতিসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত ৪০ দেশের জলবায়ু সম্মেলনে আজ সোমবার আন্তোনিও গুতেরেস এ কথা বলেন। আগামী নভেম্বরে মিসরে বসবে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনের পরবর্তী বৈশ্বিক (কপ–২৭) আয়োজন। এর আগে বার্লিন সম্মেলন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোর মন্ত্রীদের উদ্দেশে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমাদের সামনে দুটি বিকল্প থেকে একটি পছন্দ বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে হয় একযোগে উদ্যোগ নিতে হবে, নয়তো একযোগে আত্মহত্যা করতে হবে।’
বিশ্বব্যাংকের মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক ব্যাংকগুলোর সমালোচনা করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান জলবায়ু পরিবর্তন রোধে লক্ষ্য অর্জনের জন্য পুরোপুরি কার্যকর নয়। জলবায়ু তহবিলে প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহে এসব প্রতিষ্ঠান কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার জরুরি।
এমন এক সময় গুতেরেস এসব কথা বললেন যখন তীব্র তাপদাহে পুড়ছে ইউরোপের বড় অংশ। যুক্তরাজ্যে তাপমাত্রা রেকর্ড ৪০ কিংবা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে এটাই হবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। তাপদাহের জেরে ফ্রান্স, স্পেনে দেখা দিয়েছে দাবানল।
ইউরোপের পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় দাবানল জ্বলছে। দাবানলের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি পেরুর মাচু পিচুর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। তাপদাহ বইছে বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকাতে।
কপ–২৭ সম্মেলনের আগে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের দেশগুলো জ্বালানি ও খাবারের বাড়তি দাম নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। করোনা মহামারির প্রভাব মোকাবিলার পাশাপাশি এখন এসব দেশকে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাত সামাল দিতে হচ্ছে। এর মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ নতুন করে চাপ তৈরি করেছে।
যুক্তরাজ্যে তাপমাত্রা রেকর্ড ৪০ কিংবা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে এটাই হবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। তাপদাহের জেরে ফ্রান্স, স্পেনে দেখা দিয়েছে দাবানল।
গত বছরের নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় কপ–২৬ জলবায়ু সম্মেলনে দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১ দশিমক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত উদ্যোগ ও সমন্বিত এখনো চোখে পড়েনি। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে গৃহীত উদ্যোগের বিষয়ে হালনাগাদ জাতীয় কৌশলপত্র চলতি বছর প্রকাশের কথা রয়েছে দেশগুলোর।