পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন চুক্তি ঘোষণা দেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে গঠিত অকাস জোটকে সতর্ক করেছে চীন। আজ মঙ্গলবার বেইজিং বলেছে, অকাসের মিত্ররা ‘ভুল ও বিপজ্জনক পথে’ পা বাড়াচ্ছে। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সানডিয়াগোর নৌঘাঁটিতে তিন দেশের নেতারা বৈঠকের পর অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন দেওয়ার চুক্তিটি চূড়ান্ত করেন।
গত সোমবার অস্ট্রেলিয়া ঘোষণা দিয়েছে, চুক্তির আওতায় দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাঁচটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন কিনবে। এরপর একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার অধীনে মার্কিন ও ব্রিটিশ প্রযুক্তির সমন্বয়ে একটি নতুন মডেল তৈরি করবে। দৃশ্যত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উদীয়মান চীনকে মোকাবিলায় পশ্চিমাদের শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোর দিয়ে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। যদিও পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন হাতে পাওয়ার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া অভিজাত সামরিক দেশের তালিকায় নাম লেখাতে যাচ্ছে। প্রায় ১৮ মাস আগে অকাস জোট গঠিত হয়। চীনের সামরিক বিস্তার ঠেকাতে মার্কিন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এই জোট গঠিত হয়।
নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সর্বশেষ যৌথ বিবৃতি প্রমাণ করে, দেশ তিনটি তাদের নিজস্ব ভূরাজনৈতিক স্বার্থে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করে আরও ভুল ও বিপজ্জনক পথে হাঁটছে।
পশ্চিমা মিত্ররা অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দিচ্ছে অভিযোগ করে ওয়াং বলেন, তিন দেশের এই নিরাপত্তা চুক্তি স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতারই প্রকাশ। তিনি বলেন, এই সাবমেরিন বিক্রি পারমাণবিক অস্ত্রবিস্তারের মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। এটি পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তাররোধ চুক্তির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি বিশেষ কৌশলগত নিরাপত্তা চুক্তি হিসেবে অকাস জোটের ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই সময় চুক্তির অধীনে সাবমেরিন ক্রয়সহ অন্যান্য বিষয়েও সহযোগিতার কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা।