বিশ্বের চার ভাগের এক ভাগ মানুষ এখনো সুপেয় পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পানির ব্যবহার নিয়ে মানব জাতিকে নতুন করে ভাবতে হবে। পানিসম্পদ রক্ষায় ও পানির ব্যবহারে পরিবর্তন আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। পৃথিবীর সমৃদ্ধ একটি ভবিষ্যৎ নিশ্চিত ও সংঘাত ঠেকাতে চাইলে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে বৈশ্বিকভাবে।
বিশ্ব পানি দিবস (২২ মার্চ) উপলক্ষে জাতিসংঘ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনে গত শুক্রবার এ কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞসহ ১০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
সম্মেলনের আগে ও সম্মেলন চলাকালে এতে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা পানিসম্পদ রক্ষায় প্রায় ৭০০ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘পানি হলো সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। বৈশ্বিক রাজনীতির যেসব অ্যাজেন্ডা আছে, তার কেন্দ্রে পানিসম্পদ থাকা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে মানব জাতির সব আশা কোনো না কোনোভাবে পানিসম্পদ রক্ষায় একটি নতুন বিজ্ঞানভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর নির্ভর করছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার এটাই সময়।’
গত চার দশকের মধ্যে পানি নিয়ে জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন ছিল এটি। সম্মেলন শুরুর আগে গুতেরেস পানি নিয়ে সতর্ক করে বলেন, ‘পানি বিশ্ব মানবতার প্রাণশক্তি। ভ্যাম্পায়ারের মতো পানি ব্যবহার ও লাগামহীন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জেরে পানিসম্পদ নিয়ে বিশ্ব এখন অন্ধভাবে এক বিপজ্জনক পথে হাঁটছে।’
সম্মেলন শুরুর এক দিন আগে জাতিসংঘ ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট-২০২৩’ প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশই সুপেয় পানি পানের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আর মৌলিক স্যানিটেশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত ৪৬ শতাংশ মানুষ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাতিসংঘ ২০৩০ সাল নাগাদ সব মানুষের জন্য সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নিশ্চিতের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বছরে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন থেকে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হবে।