মানুষের শরীরে কিছু পুরোনো ভাইরাস রয়েছে। লাখ লাখ বছর ধরে এসব ভাইরাস মানবশরীরের ডিএনএর ভেতরে অবস্থান করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব ভাইরাস ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে মানুষকে সহায়তা করে।
যুক্তরাজ্যের ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এসব ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁদের মতে, যখন মানুষের শরীরে ক্যানসারের কোষগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন ডিএনএর ভেতরে সুপ্ত অবস্থায় থাকা পুরোনো এসব ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে।
বিজ্ঞানীর বলছেন, সক্রিয় হয়ে ওঠার পর এসব ভাইরাস মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। ক্যানসারের কোষবাহী টিউমারকে আক্রমণ করতে পারে। গবেষণালব্ধ এই জ্ঞান ক্যানসার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় টিকা আবিষ্কারে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্যানসারের কোষবাহী টিউমারের চারপাশে বি-সেল নামের একধরনের উপাদান থাকে। এটা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার অন্যতম একটা অংশ, যা মানবশরীরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরিতে ভূমিকা রাখে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই বি-সেলের সঙ্গে ফুসফুসের ক্যানসার প্রতিরোধ করে ভালোভাবে বেঁচে থাকার মধ্যে একটি সংযোগ খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা।
এই বি-সেল যেহেতু মানুষের শরীরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তাই এটা শুধু ক্যানসার নয়, করোনার মতো আরও অনেক ভাইরাসের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে মানুষকে সহায়তা করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরোনো এই ভাইরাস ক্যানসারের কোষগুলোকে পুরোপুরি প্রতিরোধ করতে সক্ষম নয়। তবে এই ভাইরাস কোষগুলোকে ভেঙে টুকরা টুকরা করে ফেলতে পারে। একদিকে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো, অন্যদিকে ক্যানসারের কোষগুলো ভেঙে টুকরা করার মধ্য দিয়ে এসব ভাইরাস ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে।
এ বিষয়ে ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক জুলিয়ান ডাউনওয়ার্ড বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের শরীরের অ্যান্টিবডিতে লাখ লাখ বছরের পুরোনো এসব ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে।