খুদে বার্তা আর ই-মেইলের যুগে হাতে লেখা চিঠিপত্র আদান-প্রদান উঠে যাওয়ার পথে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়ার পথে ডাকব্যবস্থা। কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়ে এসে যদি বার্তা বহনে প্রাচীন যুগের ‘পায়রাপদ্ধতি’ ব্যবহারের কথা শোনেন, তাহলে নিশ্চয়ই বিস্মিত হবেন।
কাজটি করবে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ওডিশা রাজ্যের পুলিশ। দুর্যোগে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হলে বার্তা বহনের জন্য একঝাঁক পায়রাকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ওডিশার কটক জেলা পুলিশ।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে থানাগুলো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগে পায়রা ব্যবহার করত। ওডিশা রাজ্যের বার্তাবাহক পায়রা পরিষেবা বিভাগ এ কাজে শতাধিক ‘বেলজিয়ান হোমার’ জাতের পায়রাকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
কটক জেলার ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ সতীশ কুমার গজভিয়ে বলেন, ‘ঐতিহ্য বিবেচনায় নিয়ে আমরা এসব পায়রা রেখেছি। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমরা সেগুলোকে সংরক্ষণ করছি।’
পুলিশ বলছে, এসব পায়রা ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার গতিতে ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে। গত চার দশকে অন্তত দুবার যোগাযোগের ক্ষেত্রে পায়রা ‘লাইফলাইন’ হিসেবে কাজ করেছে। উপকূলীয় এলাকায় ১৯৯৯ সালে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। তখন পায়রা যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এর আগে ১৯৮২ সালে রাজ্যের কিছু অংশে বন্যার সময় বার্তাবাহক পায়রা ভূমিকা রেখেছিল।
পায়রা সাধারণত হালকা ওজনের কাগজে লেখা বার্তা বহন করতে পারে। কাগজটি একটি ক্যাপসুলের মতো বস্তুতে ঢোকানোর পর পায়রার একটি পায়ে বেঁধে দেওয়া হয়।
পায়রাগুলোর দেখভাল করেন পরশুরাম নন্দ। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট জায়গায় বাক্সে রাখা অবস্থায় পাঁচ থেকে ছয় সপ্তাহ বয়সে পায়রাগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করা হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে কিছুটা দূরে নিয়ে পায়রাগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সেগুলো নিজ নিজ জায়গায় ফিরে আসে।