ট্রুডোর বিচ্ছেদের খবরে যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাল বিশ্ব

জাস্টিন ট্রুডো ও সোফি গ্রেগোরি ট্রুডো
ফাইল ছবি: এএফপি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও সোফি গ্রেগোরি ট্রুডোর বিচ্ছেদের খবরে বুধবার ভরা ছিল দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো। কানাডার বাইরেও মানুষের আগ্রহ ছিল দুজনের এই বিচ্ছেদ নিয়ে। বিষয়টি খবরের শিরোনাম হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড ও ভারতসহ অন্য দেশগুলোতেও।

ট্রুডো-সোফির বিচ্ছেদের খবরগুলো করা হয়েছে মূলত এ নিয়ে ট্রুডোর করা একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট থেকে। ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘সোফি ও আমি আপনাদের জানাতে চাই, অনেক খোলামেলা ও গঠনমূলক আলোচনার পর আমরা আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব সময়ের মতো আমরা ঘনিষ্ঠ পরিবার হিসেবে থাকব। আমাদের মধ্যে গভীর ভালোবাসা থাকবে।’

এ বিচ্ছেদের খবর ফলাও করে প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট। সিএনএন, সিবিএস ও এনবিসিসহ দেশটির বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ট্রুডো-সোফির খবর শিরোনাম হয়েছে। বুধবার বিকেলে মার্কিন সাময়িকী পিপল-এর ওয়েবসাইটে শীর্ষ সংবাদ ছিল এই বিচ্ছেদ। সংবাদমাধ্যম টিএমজেড-এর ওয়েবসাইটেও খবরটি গুরুত্ব পেয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সিবিসি নিউজ নেটওয়ার্কের সঙ্গে কথা বলেছেন যোগাযোগ বিষয়ক সংস্থা সিনট্যাক্স স্ট্রাটেজিকের প্রধান নির্বাহী (সিইও) জেনিফার স্টেওয়ার্ট। তাঁর মতে, কানাডার চেয়ে বাইরের দেশগুলোতে ট্রুডো-সোফির বিচ্ছেদের খবর বেশি নজর কাড়বে। তিনি বলেন, ‘এটা কানাডার খবর না, আন্তর্জাতিক খবর। ট্রুডো ও সোফি—দুজনেরই তারকা খ্যাতি রয়েছে। আর ট্রুডোর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মানুষের সহানুভূতি রয়েছে। আমি মনে করি, কানাডার চেয়ে দেশটির বাইরের মানুষের এই সহানুভূতি বেশি।’

সম্প্রতি রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেকের সময় যুক্তরাজ্য সফরে গিয়েছিলেন ট্রুডো ও সোফি। তাঁদের বিচ্ছেদের খবর বিবিসির মূল পাতায় স্থান করে নিয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান ও ডেইলি মেইলের মতো ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলোও এ বিচ্ছেদ নিয়ে খবর করেছে। এর আগে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যের সময়ও যুক্তরাজ্যের রক ব্যান্ড কুইনের একটি গান গেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন ট্রুডো।

২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ট্রুডো। সে সময় মার্কিন সাময়িকী ভোগের প্রচ্ছদে স্থান করে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নজর কেড়েছিলেন ট্রুডো ও সোফি। পরে ২০১৭ সালে তাঁদের নিয়ে আরেকটি নিবন্ধ প্রকাশ করে ভোগ। তাতে দুজনের দীর্ঘ দিনের ভালোবাসার ওপর আলোকপাত করা হয়েছিল।

এই বিচ্ছেদে হলিউড তারকাদের বিচ্ছেদের মতো অনুভূতি রয়েছে বলে মনে করেন এন্টারপ্রাইজ কানাডার প্রেসিডেন্ট জাসন লিয়েটার। সিবিসি নিউজ নেটওয়ার্ককে তিনি বলেন, ‘তিনি দীর্ঘ দিন ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী। আমরা তাঁকে চিনি, তাঁর পরিবারকে চিনি। এই খবর শোনার পর আমি আশা করছিলাম, তাঁদের সন্তানেরা যেন ভালো থাকে।’

সাবেক এই দম্পতিকে নিয়ে খবর বেরিয়েছে ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যমগুলোতেও। এ নিয়ে কানাডার চার্লিটন ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক জোনাথন মালয় বলেন, ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বিশ্বে মানুষের কাছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে।

জোনাথন মালয় বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ট্রুডোর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সব সময়ই মানুষের অস্বাভাবিক রকমের আগ্রহ রয়েছে। তাই তাঁর পারিবারিক জীবনে এমন একটি দুর্ভাগ্যজনক ও একান্ত ব্যক্তিগত ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশ করা অবাক করার মতো কিছু নয়।