মাথার চুল সব পেকে সাদা হয়েছে আগেই। এক-দুই করে জীবনের আটটি দশক পেরিয়েছেন। কিন্তু পড়াশোনার স্বপ্ন এখনো ফুরায়নি। বই-খাতা নিয়ে বসেছেন। পরীক্ষা দিয়েছেন। ৮৭ বছর বয়সে এসে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন! এত বেশি বয়সে ডিগ্রি অর্জন করে বেশ শোরগোল ফেলে দিয়েছেন তিনি।
বলা হচ্ছে, ভারাথা শানমুগানাথানের কথা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারাথার বাড়ি শ্রীলঙ্কায়। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে তিনি অভিবাসী হিসেবে কানাডায় বসবাস করছেন। দেশটির ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে চলতি মাসের শুরুতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন ভারাথা। বিশ্ববিদ্যালয়টির মুখপাত্র গ্লোরিয়া সুহাসিনি জানান, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবচেয়ে বেশি বয়সে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা শিক্ষার্থী এখন শ্রীলঙ্কা থেকে আসা ভারাথা।
তবে এবারই প্রথম নয়, আরও একটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে এই নারীর। নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে ফলিত ভাষাতত্ত্বে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলেন ভারাথা। আর স্নাতক করেছিলেন ভারতের মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি থেকে। শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় ইতিহাস ও ইংরেজি এবং লন্ডনে ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে ভারাথার। এখন কানাডায় প্রবীণ এই নারী স্নাতকোত্তর করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে। বিষয় ‘শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ ও শান্তি অর্জনের প্রক্রিয়া’।
২০০৪ সালে মেয়ের সঙ্গে কানাডায় পাড়ি জমান ভারাথা। তাঁর মেয়েও ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। কানাডায় আসার আগে নিজ দেশে কয়েক দশক ধরে চলা তামিল-সিংহলি গৃহযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে ভারাথা ও তাঁর পরিবারকে। মূলত গৃহযুদ্ধের এই ভয়াল অভিজ্ঞতা তাঁকে গৃহযুদ্ধ ও শান্তি অর্জনের প্রক্রিয়া নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনায় উদ্বুদ্ধ করেছে। এখন এসব জ্ঞান তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চান।
সিএনএনকে ভারাথা শানমুগানাথান বলেন, ‘এটি সত্যি মজার। রাজনীতি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনার ইচ্ছা আমার দীর্ঘদিনের। অবশেষে আমি সেই স্বপ্ন পূরণ করেছি।’