৬০ বছর পর সনদ

স্কুলের সনদ গ্রহণ অনুষ্ঠানে টেড সামস।
সংগৃহীত

স্কুলজীবন শেষ করেছিলেন ৬০ বছর আগে। কিন্তু সনদ হাতে পাননি। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, জরিমানার অর্থ বকেয়া রয়েছে। জরিমানা পরিশোধ না করলে সনদ দেবে না তারা। আর তিনিও এতে গা করেননি। শেষ পর্যন্ত সনদ পেয়েছেন। কিন্তু ৬০ বছর পরে এসে। বলছি যুক্তরাষ্ট্রের টেড সামসের কথা। ৭৮ বছর বয়সে এসে গত শুক্রবার স্কুলের সমাবর্তনে অংশ নিয়েছেন তিনি। পেয়েছেন স্কুল শেষের সনদ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনাল (ইউপিআই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, টেড সামসের বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায়। সেখানকার সান গ্যাব্রিয়েল হাইস্কুলে পড়াশোনা করতেন তিনি। সময়টা ১৯৬২ সাল। টেডের স্কুল সমাপনী পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যেই কোনো একটি কারণে পাঁচ দিনের জন্য স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। এতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় বসা হয়ে ওঠেনি তাঁর।

শেষ মুহূর্তে বহিষ্কারের এ ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের ওপর গোস্‌সা হয় টেডের। যদিও এটা তাঁর শিক্ষাজীবনে বড় কোনো প্রভাব ফেলেনি। টেডের ভাষায়, ‘পরের গ্রীষ্মের মধ্যেই ওই পরীক্ষা দিয়েছিলাম। বিপত্তি বাধে সনদ নিতে গিয়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, স্কুলের পাঠাগার থেকে একটি বই নিয়ে আর ফেরত দিইনি। এ জন্য আমার জরিমানা হয়েছে। জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করলে আমাকে শিক্ষাসনদ দেওয়া হবে না।’

জরিমানার অর্থ শুনলেও অবাক হতে হয়, মাত্র ৪ ডলার ৮০ সেন্ট। এ ঘটনায় টেডের রাগ আরও বেড়ে যায়। সনদ নেবেন না বলে পণ করেন। বেরিয়ে আসেন স্কুল থেকে। এরপর আর স্কুলমুখী হননি তিনি। টেডের শিক্ষাসনদ পড়ে থাকে স্কুলের পুরোনো ফাইলে।

এখন টেডের বয়স ৭৮ বছর। মাত্র ৪ ডলার ৮০ সেন্টের জন্য শিক্ষাসনদ বিসর্জন দেওয়ার গল্পটি তিনি ছেলেমেয়েদের কাছে একাধিকবার শুনিয়েছেন। অবশেষে ৬০ বছর পরে এসে সেই সনদ হাতে পেয়েছেন টেড। গত শুক্রবার সান গ্যাব্রিয়েল হাইস্কুলের ২০২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে অংশ নেন টেড।

অনুষ্ঠানের এক ভিডিওতে দেখা যায়, নীলরঙা সমাবর্তন গাউন পরে হাস্যোজ্জ্বল মুখে সনদ নিচ্ছেন বৃদ্ধ টেড। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অনেকেই নিজের শিক্ষাসনদ বাঁধাই করে ঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখেন। এটা দেখে তাঁরও শখ হয়েছিল। তাই ঘরের দেয়ালের শোভা বাড়াতে এ বয়সে এসে সনদ নিয়েছেন। তবে সনদ নেওয়ার জন্য বকেয়া জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেছেন কি না, তা জানাননি তিনি।