বেছে বেছে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ এড়িয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সংবাদের প্রতি মানুষের আস্থাও কমছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সমীক্ষায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। খবর রয়টার্সের।
রয়টার্স ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব জার্নালিজম বার্ষিক ডিজিটাল নিউজ রিপোর্টের করা জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রতিবেদন বেছে বেছে এড়িয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
জরিপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ মানুষই সংবাদ পড়ে থাকেন। তাঁদের ৩৮ শতাংশ বলেছেন, প্রায়ই কিংবা কোনো কোনো সময় তাঁরা সংবাদ এড়িয়ে যান। ২০১৭ সালে এ ধরনের মানুষের সংখ্যা ছিল ২৯ শতাংশ। বিশেষ করে ৩৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৩৬ শতাংশই বলেছেন, সংবাদ তাঁদের মানসিক অবস্থা দুর্বল করে।
সংবাদের প্রতি মানুষের আস্থাও কমছে। যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদের প্রতি সবচেয়ে কমসংখ্যক মানুষ আস্থা রাখেন। গড়ে ৪২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, অধিকাংশ সময়ই তাঁরা অধিকাংশ সংবাদে আস্থা রাখেন। সমীক্ষা চালানো দেশগুলোর প্রায় অর্ধেকেই এই সংখ্যা কমেছে। কেবল সাতটি দেশে বেড়েছে।
প্রতিবেদনে রয়টার্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক রাসমুস ক্লেইস নিয়েলসেন লিখেছেন, অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, সংবাদমাধ্যম অযৌক্তিক রাজনৈতিক প্রভাব খাটায়। কেবল স্বল্পসংখ্যক মনে করেন, সংবাদ সংগঠনগুলো নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থের চেয়ে সমাজের জন্য সবচেয়ে যেটা ভালো, তার ওপর জোর দিয়ে থাকে।
মোট ৪৬টি ভোক্তা অঞ্চলে ৯৩ হাজার ৪৩২ জনের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, টিকটকের মতো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মূল সংবাদে যাওয়া তরুণ পাঠকের সংখ্যা বাড়ছে। তবে নামী সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক দুর্বল।
প্রতি সপ্তাহে ১৮-২৪ বছর বয়সী পাঠকদের ৭৮ শতাংশই বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ জড়ো করে প্রকাশ করা ওয়েবসাইট বা প্রোগ্রাম, সার্চ ইঞ্জিন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়ে সংবাদ পড়ে থাকেন।
একই বয়সের ৪০ শতাংশই টিকটক ব্যবহার করে থাকেন। তাঁদের ১৫ শতাংশ বলেছেন, সংবাদ খুঁজে পেতে, আলোচনা করতে এবং শেয়ার করতে তাঁরা টিকটক ব্যবহার করেন।
অর্থ খরচ করে অনলাইনের সংবাদ পড়া মানুষের সংখ্যা আগের মতোই থাকতে পারে। আর ডিজিটাল গ্রাহকের বড় অংশই কয়েকটি জাতীয় নামীদামি প্রতিষ্ঠানের দিকেই যাবে। যে ২০টি দেশে অর্থ খরচ করে সংবাদ পড়ার ব্যাপক প্রচলন আছে, জরিপে অংশ নেওয়া তাঁদের ১৭ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা অনলাইনে সংবাদ পড়তে অর্থ খরচ করেন। আগের বছরও সংখ্যাটা একই ছিল।