ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মার্কেল রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে তাঁরা এ কথা জানান। রাজপরিবারের কারও সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করে তাঁদের নেওয়া এমন সিদ্ধান্তে সবাই বিস্মিত।
বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের নাতি প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মার্কেল ‘সিনিয়র রয়্যাল’ উপাধি নিতে চাচ্ছেন না। তাঁরা স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকতে চান।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, সিংহাসনের উত্তরাধিকারের তালিকায় আছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের দুই নাতি প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি। সে হিসেবে প্রিন্স উইলিয়াম ও তাঁর স্ত্রী কেট, প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে বিবেচিত হন। তাঁদের নির্দিষ্ট কিছু রাজকীয় দায়িত্ব পালন করার বাধ্যবাধকতা থাকে। হ্যারি-মেগান এই জ্যেষ্ঠ সদস্যের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন। এর অর্থ দাঁড়ায়, তাঁদের ওপর থাকা রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইছেন তাঁরা।
রানির সঙ্গে কোনো ধরনের পরামর্শ না করে হ্যারি-মেগানের নেওয়া এমন সিদ্ধান্তে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ তিনি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দাদি, বাবা প্রিন্স চার্লস বা ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা করেননি প্রিন্স হ্যারি। এতে বাকিংহাম প্যালেস হতাশ।
বুধবার প্রিন্স হ্যারি ও মেগান বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা পরস্পরের সঙ্গে অনেক আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি অনেক মাসের আলোচনার প্রতিচ্ছবি। আমরা রয়্যাল ফ্যামিলির সিনিয়র সদস্য হিসেবে পদত্যাগ করলেও রানিকে সমর্থন করা অব্যাহত রাখতে চাই। আমরা আর্থিকভাবে স্বাধীন হওয়ার জন্য কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা যুক্তরাজ্য ও উত্তর আমেরিকায় থাকার সময়ের মধ্যে একটি সমন্বয় করতে চাই।’
এই দম্পতির এমন ঘোষণার ৪০ মিনিটের মাথায় বাকিংহাম প্যালেস আরেকটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘হ্যারি-মেগানের ভাবনাটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। তাঁরা ভিন্নভাবে থাকার ইচ্ছা পোষণ করছেন, সেটি আমরা বুঝতে পারছি। তবে এ ধরনের জটিল বিষয় নিয়ে আরেকটু সময় নিয়ে কাজ করতে হবে।’
গণমাধ্যমের বাড়াবাড়ি নিয়ে কিছুটা বিরক্ত হ্যারি-মেগান। ২০১৮ সালের মে মাসে হ্যারি-মেগানের বিয়ে হয়। এর এক বছরের মাথায় ছেলে আর্চির জন্ম। এই দম্পতিকে নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক সময়ই নেতিবাচক খবর প্রকাশ করা হয়েছে। ভিন্ন দেশের ও শ্বেতাঙ্গ না হওয়ায় নানা ধরনের নেতিবাচক কথা শুনতে হয়েছে মেগান মার্কেলকে। গণমাধ্যমের আলো থেকে নিজেদের ও সন্তান আর্চিকে আড়ালে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাঁরা। ধারণা করা হচ্ছে, এরই অংশ হিসেবে এবারের বড়দিন তাঁরা যুক্তরাজ্যে রাজপরিবারের সঙ্গে কাটাননি। বরং ছয় সপ্তাহের ছুটিতে তাঁরা এখন কানাডায় আছেন।