যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরোধিতার মধ্যেই জাতিসংঘে কোভিড-১৯ মহামারি সম্পর্কে ‘ব্যাপক ও সমন্বিত সাড়া’ দেওয়ার বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বের ভূমিকার স্বীকৃতিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের প্রস্তাব নিয়ে অনুষ্ঠিত ভোটে যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন দেয় ইসরায়েল। ইউক্রেন ও হাঙ্গেরি অনুপস্থিত ছিল। ভোটে ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১৬৯টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। এতে ব্যাপক সমর্থন নিয়ে প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। এ প্রস্তাব নিয়ে গত মে মাস থেকে আলোচনা চলছে।
প্রস্তাবটি সর্বজনীন সমাধান বলা হচ্ছে। কারণ, এতে মহামারি নিয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। এতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে মূল নেতৃত্বের ভূমিকার স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি মহামারি সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়ার অনুঘটক এবং সমন্বয়ে জাতিসংঘের ব্যবস্থার মৌলিক ভূমিকার বিষয়টি উঠে এসেছে।
গত জুলাই মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সংস্থাটির বিরুদ্ধে করোনা মহামারি অব্যবস্থাপনা ও বৈশ্বিক সতর্কতা জারিতে দেরি করার অভিযোগ তোলে ওয়াশিংটন।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ডব্লিউএইচওকে অর্থায়ন স্থগিত করার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, সংস্থাটি বেইজিংঘেঁষা ও তাদের হয়ে কথা বলছে। করোনা মহামারি নিয়ে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ‘চীনের পুতুল’ বলেও তিরস্কার করেন তিনি।
জাতিসংঘের প্রস্তাবে মহামারি ও এর নেতিবাচক প্রভাব প্রশমিত করতে এবং তা কাটিয়ে উঠতে গভীর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সংহতি তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে। গত মার্চ মাসে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক লড়াই বন্ধের যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, প্রস্তাবটি তা সমর্থন করে।
প্রস্তাবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে পণ্য জরুরি, তা পাওয়ার ক্ষেত্রে অযৌক্তিক বাধা জরুরি অপসারণ বা অবরোধ দূর করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে দেশগুলোকে খাবার ও কৃষির সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রকল্প চালু রাখতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে, যাতে টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালু রাখা যায়।
অবশ্য ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্র ওই প্রস্তাবে থাকা যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রের একটি অনুচ্ছেদ সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়, যাতে তারা গর্ভপাত বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। ওই অনুচ্ছেদ সরানোর পক্ষে লিবিয়া ও ইরাক ভোট দিয়েছিল। ১২০টি দেশ এর পক্ষে ভোট দেয় এবং ২৫টি দেশ ভোট দেয়নি।