যুক্তরাজ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল বিরোধী দল লেবারের কাছে ধরাশায়ী হবে—এমনটাই মনে করা হচ্ছিল। প্রত্যাশা অনুযায়ী বিজয় পায়নি বিরোধী দল। ফলাফল কিছুটা খারাপ করলেও নিজেদের ধরাশায়ী হওয়া ঠেকিয়ে সন্তুষ্ট ক্ষমতাসীনরা।
বৃহস্পতিবার দেশটির ১৫০টি কাউন্সিলের ৪ হাজার ৩০টি কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০১টি কাউন্সিলের ফলাফল পাওয়া যায়।
গত আট বছর ধরে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি, জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার করুণ হাল, ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং বিতর্কিত অভিবাসন নীতির কারণে তুমুল সমালোচনার মুখে। ফলে থেরেসা মে’র সরকার এ নির্বাচনে বড় ধরনের মাশুল দেবে হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। বিশেষ করে অভিবাসী অধ্যুষিত লন্ডনে একচেটিয়া বিজয়ের প্রত্যাশা ছিল লেবারের। লন্ডনে কনজারভেটিভের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাউন্সিলগুলো নিজেদের দখলে নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টাও চালিয়েছে দলটি।
ফলাফলে দেখা যায়, লেবারের অন্যতম নিশানা ওয়ান্ডওয়ার্থ এবং বারনেট কাউন্সিলে ক্ষমতাসীনরা কিছু কাউন্সিলর পদ হারালেও নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেনফিল টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষ হতাহত হওয়ার ঘটনায় সরকারের প্রতি ক্ষোভ ছিল অনেক। কিন্তু ওই এলাকার কেনজিংটন ও চেলসি কাউন্সিলে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে কনজারভেটিভ।
তবে ক্ষমতাসীনদের হাত থেকে প্লাইমাউথ কাউন্সিল নিজেদের দখলে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে লেবার পার্টি। বাসিলডন ও পিটারবারায় ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণ ঝুলিয়ে দিতে পেরেছে তারা।
অভিবাসন বিরোধী কট্টর ডানপন্থী দল ইউকে ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টি (ইউকিপ) অনেকটা মুছে গেছে এই নির্বাচনে। ৯২টি কাউন্সিলর পদ হারিয়ে আছে কেবল দুটি। ইউকিপের এই ধস ক্ষমতাসীনদের ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে দিয়েছে।
বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন মেনে নিয়েছেন যে তিনি প্রত্যাশা অনুযায়ী বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারেননি। তবে তাঁর দল অতীতের চেয়ে অনেক ভালো করেছে এবং ভোটের হারও বেড়েছে। দলটির নির্বাচনী প্রচার প্রধান অ্যান্ড্রু গুয়েন স্বীকার করেন যে, ইহুদি বিদ্বেষী বলে সম্প্রতি যে প্রচারণা হয়েছে, নির্বাচনে তাঁর প্রভাব পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেন, লেবার পার্টি বড় বিজয়ের জন্য স্বার্থের সবটুকু করেছিল, কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, এ ফলাফল সুখকর নয়। এ নির্বাচনকে একটি বার্তা হিসেবে নিয়ে তিনি পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কাজ করবেন।
কেবল ইংল্যান্ডের কাউন্সিলগুলোতে ছিল নির্বাচন। দেশটির অন্য তিন প্রদেশ ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ডে এ দফায় নির্বাচন হয়নি। সেই সঙ্গে লন্ডনের ৫টি কাউন্সিলে নির্বাহী মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।