দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতাদের এক করতে যাচ্ছে। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে, শত্রুতা ভুলে উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম প্রান্ত থেকে বিশ্ব নেতারা দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ম্যান্ডেলার শেষকৃত্য ১৫ ডিসেম্বর রোববার অনুষ্ঠিত হবে। পূর্ব কেপটাউনের কুনু গ্রামে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই ওই গ্রামে জন্মেছিলেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদনে জানানো হয়, এর আগে পোপ দ্বিতীয় জন পল, প্রিন্সেস ডায়ানা, প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি, উইন্সটন চার্চিলসহ অনেক খ্যাতিমান ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের শেষকৃত্যে বিশ্বনেতারা অংশ নিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের থেকে ম্যান্ডেলা ভিন্ন। তাঁর আবেদন সর্বত্র ও ব্যাপক। তাই আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে এই শেষকৃত্য হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিত্বদের মহা সম্মিলন।
ম্যান্ডেলার শেষকৃত্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যোগ দেবেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা ও কয়েকজন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাজ্য থেকে প্রিন্স চার্লস, প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের যাওয়ার কথা।
এ ছাড়া চীন, ইরান, কিউবা, ইসরায়েল, ফিলিস্তিনি নেতারা যাবেন।
শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ওবামার সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানির প্রথমবারের মতো সাক্ষাত্ হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের বাইরে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র, সংগীত, ধর্মীয় অঙ্গনের প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এই অনুষ্ঠানে থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ম্যান্ডেলার মরদেহ প্রিটোরিয়ার একটি সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কাল রোববার জাতীয় প্রার্থনা দিবস পালন করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামী সোমবার জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে ৯৫ হাজার আসনের একটি স্টেডিয়ামে জাতীয় শোক অনুষ্ঠান পালন করা হবে। ১১ ডিসেম্বর থেকে প্রিটোরিয়ায় তিন দিনের জন্য ম্যান্ডেলার মরদেহ রাখা হবে। এরপর ১৫ ডিসেম্বর পূর্ব কেপটাউনের কুনু গ্রামে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় সময় রাত আটটা ৫০ মিনিটে জোহানেসবার্গের নিজ বাড়িতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ম্যান্ডেলা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর চার মাস ১৭ দিন। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের এই মহান নেতার মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।