২০২১ সালে কিছু ঘটনা বৈশ্বিক রাজনীতি তথা কূটনীতির চেহারা আমূল পাল্টে দিতে পারে। বছরের শুরুতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিক বিদায় হবে। দায়িত্ব নেবেন জো বাইডেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানিকেও এ বছর ক্ষমতা ছাড়তে হতে পারে। ক্ষমতা ছাড়বে জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেলও। এ ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধের টিকা নিয়ে হয়তো বৈশ্বিক রাজনীতির আসল চেহারা উন্মোচিত হবে। চলতি বছর বৈশ্বিক রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে—এমন ১২টি বিষয় তুলে ধরেছে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
জানুয়ারি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা জো বাইডেন। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর খুব দ্রুত জলবায়ু চুক্তি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে একাত্ম করবেন। এশিয়া ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন ঘটবে যুক্তরাষ্ট্রের। করোনায় নুইয়ে পড়া মার্কিন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বেশ বড় ধরনের উদ্দীপক প্যাকেজ ঘোষণা করারও পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না জড়িয়ে অন্য উপায়ে মোকাবিলা করতে উদ্যোগী হতে পারেন বাইডেন। ইতিমধ্যে ইয়েমেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্টি হওয়া মানবিক বিপর্যয় এড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া ও ইরানের সঙ্গে আলোচনার আভাস দিয়েছেন বাইডেন।
ফেব্রুয়ারিতে ৬৭ বছরে পা দেবেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। একই সময়ে তিনি তাঁর গঠন করা জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির ২০ বছর পূর্তি উদ্যাপিত হবে। এরদোয়ান আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে এগোচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাই বিশ্বের নজর তাঁর দিকেও থাকবে। কারও কারও মতে নিজ দেশের সমস্যাগুলো আড়াল করার কৌশল হিসেবে এই নীতি নিয়েছে এরদোয়ান।
এই বছর সিরিয়ার কুর্দিদের ওপর আরও সহিংসতা প্রত্যক্ষ করবে বিশ্ব। একই সঙ্গে লিবিয়া ও বলকান অঞ্চলে তুরস্কের প্রভাব বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে মার্কিন নেতৃত্বে পালাবদলের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে এরদোয়ানের তুরস্কের সম্পর্ক জোরদার হতে পারে।
সিরিয়ার সর্বনাশা গৃহযুদ্ধের ১০ বছর পূর্তি হবে এই মার্চে। এই ১০ বছরে দেশটির প্রায় সব ঐতিহ্যবাহী পুরোনো শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। এই গৃহযুদ্ধে লাখো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, লাখ লাখ মানুষ গৃহহারা হয়েছে। এত কিছুর পরও সিরিয়ার ‘এক নায়ক’ বাশার আল-আসাদ ক্ষমতা আঁকড়ে বসে আছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন, প্রতিবাদ ক্ষোভ বাড়ছে। ২০২১ সালে বাশারকে আইনের আওতায় আনতে বৈশ্বিক চাপ আরও বাড়বে।
কিন্তু রাশিয়া ও ইরানের ওপর এখনো আস্থা রাখতে পারেন বাশার। এই দুই দেশ তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে আসবে। শিগগিরই বাশার সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা একমাত্র শহর ইদলিবে চূড়ান্ত সেনা অভিযান চালাতে পারে সিরিয়া। এই অভিযান বেসামরিক জনগণের জীবন চরম হুমকিতে ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এপ্রিলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর দায়িত্ব গ্রহণের চার বছর পূর্ণ হবে। আগামী বছর এই সময়ে তাঁকে আবার ভোটারদের মুখোমুখি হতে হবে। ফ্রান্সে সেকুলারিজম মতবাদ মোটামুটি পাকাপোক্ত করতে পেরেছেন মাখোঁ। জঙ্গিবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কঠোরভাবে মোকাবিলার জন্যও তাঁকে মনে রাখবে ফ্রান্স।
যদিও সমালোচকেরা বলছেন, তাঁর এই অবস্থান জঙ্গিবাদ উসকে দিয়েছে। সম্প্রতি ফ্রান্সে বেশ কিছু ছোট-বড় সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। ২০২১ সালেও এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। শুধু ফ্রান্সেই নয় সারা বিশ্বেই এসব সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে আশার কথা শোনাচ্ছে গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্সের তথ্য। এই তথ্যমতে, অন্য বছরের তুলনায় ২০২০ সালে ইউরোপে জঙ্গি হামলার ঘটনা কমেছে। ২০২১ সালে আরও কমবে।
যুক্তরাজ্য ২০২১ সালে তিনটি মহা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। প্রথমত, অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধার; দ্বিতীয়ত, ব্রেক্সিট–পরবর্তী বিশৃঙ্খলা সামলানো এবং তৃতীয়ত, সাংবিধানিক জটিলতা এড়িয়ে যুক্তরাজ্য ভেঙে যাওয়া থামানো। এ সবকিছুতেই স্কটল্যান্ডের মন্ত্রী নিকোলা স্টার্জিওন অন্যতম ভূমিকা পালন করবেন।
মে মাসে স্কটল্যান্ডের সংসদ নির্বাচনে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) জয় পেলে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে দ্বিতীয় দফায় গণভোটের দাবি উঠতে পারে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আরেকবার ভোট ঠেকানোর চেষ্টা করবেন। এরপর পরিস্থিতি কী হবে, কেউ জানে না। ২০১৭ সালে স্পেনের কাতালোনিয়ায় স্বাধীনতার দাবিতে মানুষের বিক্ষোভ কারও ভুলে যাওয়ার কথা নয় নিশ্চয়ই। যার সমাপ্তি খুব বাজেভাবে হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতিও এমন হবে কি না, তা বলা মুশকিল।
স্টার্জিওন স্কটল্যান্ডে ব্যাপক জনপ্রিয়, তিনি যেকোনো সময় স্কটিশদের স্বাধীনতার জন্য তাতিয়ে তুলতে পারেন। কিন্তু বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, স্কটিশদের মনে এখন স্বাধীনতার চেয়ে স্বাস্থ্য এবং ব্রেক্সিট–পরবর্তী অবস্থা, কোভিড–পরবর্তী অর্থনীতির মতো বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এসব ছাড়াও বরিস জনসনকে আরও অনেক রাজনৈতিক ঝড় সামাল দিতে হবে এ বছর।
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ১৮ জুন। টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তাঁর ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার ফলে এই অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন বাঁক নিলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। ক্ষমতায় থাকাকালে প্রেসিডেন্ট রুহানি তাঁর প্রতিশ্রুতি দেওয়া সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কোভিড-১৯ মহামারির কারণ ইরানের বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, দেশজুড়ে নানা রকমের দুর্নীতিসহ যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় অনেকটা ব্যর্থ হয়েছেন রুহানি। কিন্তু তিনি পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সংলাপের বিরোধিতা সেভাবে করেননি।
রুহানির তুলনামূলক উদারনীতি ও অনেকটা বাস্তববাদিতার কারণে দেশটির চরম পশ্চিম-বিরোধী রক্ষণশীল এবং সামরিক প্রধানদের সুযোগ করে দিয়েছে। রুহানি–পরবর্তী ইরানের সঙ্গে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক ও গাজার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক কেমন হবে, সেটি এখন দেখার বিষয়।
জুলাইয়ে শতবর্ষ উদ্যাপন করবে মাও সেতুংয়ের চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। চীনের আধুনিক কালের মাও সেতুং প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ বছর আরও ব্যাপকভাবে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করবেন। ‘শান্তিপূর্ণভাবে উত্থানের’ চীন তাঁর নেতৃত্বে আগ্রাসী হয়ে উঠছে। সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতিও মনোযোগ থাকবে বেইজিংয়ের।
বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তারে চীনারা আরও আক্রমণাত্মক হতে পারে এই বছর। তবে দেশটি নতুন বছরে পশ্চিমা বাধার মুখেও পড়বে। চলতি বছর নানা উপায়ে জিম্মি করে ও আমদানি বন্ধ করে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মতো দেশগুলোর প্রতি চীনের হুমকি অব্যাহত থাকবে। হংকং ও তাইওয়ানের প্রতি চীনের কর্তৃত্ববাদী কঠোর মনোভাব আরও জোরদার হতে পারে। শিনজিয়াং প্রদেশ ও তিব্বতে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বেইজিংয়ের কারণে।
টোকিওতে ২০২০ সালের পুনর্নির্ধারিত অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা এই আগস্টে। এবার আর অলিম্পিক পেছানো হবে না বলেই অনেকে বিশ্বাস করছেন। ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে বড় এই ইভেন্টে বিশ্বের সব দেশ একাত্ম হয়।
যেকোনো সময়ের তুলনায় ২০২১ সালে বৈশ্বিক সহযোগিতা অনেক বেশি প্রয়োজন হবে। সে জন্যই বছরটি জাতিসংঘের জন্য বেশি চ্যালেঞ্জের। মহামারি থেকে বিশ্বকে ঘুরে দাঁড়াতে নেতৃত্ব দেবে জাতিসংঘ। বিশ্বের ধনী দেশগুলো হয়তো কোভিড-১৯ থেকে বের হওয়ার রাস্তা নিজেরাই বের করে ফেলবে। কিন্তু জাতিসংঘের দায়িত্ব হবে, যেন বিশ্বের প্রতিটি মানুষ নিরাপদে থাকে। এই বছরই রেকর্ড পরিমাণ সাড়ে ২৩ কোটি মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন হবে। পুরো করোনাভাইরাস মহামারির সময়কালের চেয়ে থেকে যা ৪০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যেই সবার পাশে দাঁড়াতে সাড়ে তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস।
জার্মানির প্রথম নারী চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। ২০০৫ সাল থেকে তিনি ক্ষমতায়। এই সেপ্টেম্বরে তিনি রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের যবনিকা টানতে পারেন। বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী এই নেত্রীর বিদায় জার্মানি ছাড়াও পুরো ইউরোপের ওপর প্রভাব ফেলবে। সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে জার্মানিতে বড় রকমের পরিবর্তন আসতে হতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
ম্যার্কেল চলে যাওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্ক বিশেষ করে ইউরোজোনের শ্রেণিবিন্যাস, ইউরোপের বাজেট ও সামরিক জোট ন্যাটোর ভবিষ্যৎ কেমন হবে— সেটি ওই অঞ্চলের মানুষকে এখনই ভাবিয়ে তুলছে।
রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে ১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর জন্মেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর জন্মের ৩৫ বছর আগের অক্টোবরেই সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্ম হয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ৩০ বছর হতে যাচ্ছে এ বছর। সাবেক কেজিবি সদস্য পুতিন ১৯৯৯ সাল থেকে কখনো প্রধানমন্ত্রী, কখনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আছেন। শুরু থেকেই তিনি সোভিয়েত সাম্রাজ্য ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পুতিন আরও দুই মেয়াদে ছয় বছর করে মোট ১২ বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পথ খোলাসা করে নিয়েছেন। তবে ইদানীং তাঁকে বেশ ক্লান্ত ও বিচ্ছিন্ন মনে হচ্ছে। নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছেন বলেও শোনা যায়। রাশিয়ায় পুতিনের জনপ্রিয়তা দিন দিন কমে আসছে। রাশিয়ার আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস তেলের আয় পড়তির দিকে। সেপ্টেম্বরের সংসদীয় নির্বাচনে পাহাড়সমান অর্থনৈতিক সমস্যা ও দেশের পূর্বাঞ্চলে অশান্তির কারণে পুতিন ও তাঁর দল কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়বে।
এদিকে এই অক্টোবরেই চাঁদে মহাকাশযান পাঠানোর কথা রয়েছে রাশিয়ার।
নভেম্বরে গ্লাসগো শহরে কোপ–২৬ জলবায়ু সম্মেলনের আয়োজন করবে যুক্তরাজ্য। আশা করা হচ্ছে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নে নতুন উদ্দীপনা জোগাবে এই সম্মেলন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব হুমকির মুখে উল্লেখ করে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস ২০২১ সালে সব সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জলবায়ু জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান করেন।
‘প্রকৃতির বিরুদ্ধে মানবজাতির আত্মঘাতী যুদ্ধের’ শীর্ষে ব্রাজিলের ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো। যিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক বলে মানতে নারাজ। বিশ্বের ‘কার্বন স্টোর’খ্যাত ব্রাজিলের আমাজনে নিয়মিত বন উজাড় করা হচ্ছে। গত এক দশকে যা সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে ক্ষমতায় বসেন বলসোনারো। তাঁর ক্ষমতায় বসার পর আমাজনে বন উজাড়ের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ২০২১ সালে এটা অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং–উনের দায়িত্ব গ্রহণের ১০ বছর পূর্তি হবে এই ডিসেম্বরে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বোমা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে উনের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেছিলেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এই দুই নেতার সরাসরি সাক্ষাৎও হয়েছিল—যা অবাক করেছে বিশ্বের অনেককেই। তবে উন পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসেননি। ট্রাম্পের পর বাইডেন দায়িত্ব নিয়ে এই উত্তর কোরিয়াকে কীভাবে সামলান, সেটা দেখার বিষয়।
এ ছাড়া চলতি বছর ভারত-চীন ও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। জাতিসংঘের বেশির ভাগ সদস্যরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি অনুমোদন করেছে, যা ২২ জানুয়ারি কার্যকর হবে। চুক্তিতে নানা ঘাটতি থাকলেও এই পদক্ষেপকে আশাপ্রদ বলে ভাবা হচ্ছে।
বিশ্বের শক্তিধর দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আসন্ন ফেব্রুয়ারিতে। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে এই চুক্তি নবায়ন করতে পারেন। যদিও এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়া এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।