যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যর্পণ অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আজ বৃহস্পতিবার এক প্রাথমিক শুনানির মুখোমুখি উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
জামিনের শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে গতকাল বুধবার অ্যাসাঞ্জের ৫০ সপ্তাহের কারাদণ্ড হয়। দণ্ড পাওয়ার পর দিন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যর্পণ অনুরোধের বিষয়ে প্রাথমিক শুনানির মুখোমুখি হলেন।
লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে প্রায় সাত বছর অবস্থান করার পর গত ১১ এপ্রিল অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সাবেক মার্কিন সেনা গোয়েন্দা বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিংয়ের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণ চায় যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্র এ-সংক্রান্ত অভিযোগ নথিভুক্ত করে। অ্যাসাঞ্জ গ্রেপ্তার হওয়ার পরই মার্কিন অভিযোগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অ্যাসাঞ্জের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
চেলসি ম্যানিং লাখ লাখ মার্কিন গোপন নথি উইকিলিকসের কাছে তুলে দেন। এসব নথি উইকিলিকস ফাঁস করে দিলে হইচই পড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের নানা অপকর্ম প্রকাশ্যে আসে।
উইকিলিকসের প্রধান সম্পাদক ক্রিস্টিন হার্ফনসন গতকাল বলেছেন, অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ ঠেকাতে তাঁরা সবকিছুই করবেন।
ক্রিস্টিন সতর্ক করে বলেন, প্রত্যর্পণের বিষয়টি অ্যাসাঞ্জের জীবন-মরণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে।
অ্যাসাঞ্জ ও তাঁর সমর্থকদের আশঙ্কা, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিলে সেখানে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
২০১০ সালে উইকিলিকস লাখ লাখ গোপন মার্কিন নথি ফাঁস করার পর একই বছর অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সুইডেনে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। অ্যাসাঞ্জ এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তখনো অ্যাসাঞ্জ আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে সুইডেন তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেবে। আর সেখানে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হবে। এই আশঙ্কা থেকে ২০১২ সালে জামিনে থাকা অবস্থায় লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।
অ্যাসাঞ্জের দল তাঁর প্রত্যর্পণ ঠেকাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছে।