দুয়ারে কড়া নাড়ছে খ্রিষ্টীয় নতুন বছর। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে করোনার চোখরাঙানি দেখতে দেখতেই হাজির হয় ২০২১ সাল। এ বছর করোনার থাবা অনেকটাই কমেছে। এতে বিশ্ববাসীও মনে করেছিল, আসছে ২০২২ সালটি নেচে-গেয়ে উদ্যাপন করবে তারা। কিন্তু অমিক্রনের ধাক্কায় সেই আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছে।
ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেক বড় শহর নতুন বছর উদ্যাপনের পূর্বনির্ধারিত নানা আয়োজন বাতিল করেছে। তবে আশা–নিরাশার এ দোলাচলের মধ্যেই কিছু শহরে ফুটবে আতশবাজি।
ইউরোপ–আমেরিকার প্রধান কিছু শহরে বড় ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন সীমিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে অন্য শহরে অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা এখনো বাতিল করা হয়নি। একনজরে দেখা যাক বিশ্বের বড় কোন শহরে নতুন বছর উদ্যাপিত হচ্ছে, আর কোন শহরে আয়োজন বাতিল করা হয়েছে।
লন্ডন: করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের কারণে লন্ডনে নতুন বছরের পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। সোমবার লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এক টুইটবার্তায় এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ট্রাফালগার স্কয়ারে নতুন বছরের অনুষ্ঠান বাতিলের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি আরও লেখেন, ‘লন্ডনবাসীর নিরাপত্তাই সর্বপ্রথম।’
বার্লিন: করোনার সংক্রমণ রোধে ২৮ ডিসেম্বর থেকে জার্মানির বার্লিনে জনসমাগমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ এক ঘোষণায় এ কথা জানান। সেই সঙ্গে নববর্ষের উদ্যাপনে গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত জার্মানির মিউনিখ ও ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরেও কার্যকর হবে। এ ছাড়া ২৮ ডিসেম্বর থেকে সর্বোচ্চ ১০ জন একত্রে দেখা–সাক্ষাৎ করতে পারবেন।
প্যারিস: ফ্রান্সে করোনার ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে নতুন বছর উদ্যাপনে প্যারিসের শানজ এলিস অ্যাভিনিউতে ঐতিহ্যবাহী আতশবাজির প্রদর্শনী বাতিল করা হয়েছে। মেয়রের কার্যালয় জানায়, বর্ষবরণের উৎসবে কোনো আতশবাজি থাকছে না, হবে না কোনো ডিজে পার্টিও।
রোম: ইতালির রোমেও নববর্ষের উৎসব বাতিল করা হয়েছে। কাম্পানিয়া অঞ্চলে ২৩ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমক্ষে কোমল পানীয় পান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ভেনিসের উন্মুক্ত কনসার্ট এবং আতশবাজির প্রদর্শনী বাতিল করা হয়েছে।
দুবাই: বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফার আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন এখন পর্যন্ত বাতিল করা হয়নি। ভিজিট দুবাই ডটকমের তথ্য এমনই বলছে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাই যেতে পর্যটকদের আগে থেকেই অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পর পাঠানো কিউআর কোড চেক করেই প্রবেশাধিকারের অনুমতি দেওয়া হবে বিশ্বের সুউচ্চ ওই ভবনে।
নিউইয়র্ক: বড়দিন ও নতুন বছর উদ্যাপনে টাইমস স্কয়ারে কী করা যায় সেটি নিয়ে এখনো চিন্তাভাবনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। এখন পর্যন্ত যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে অনুষ্ঠান বাতিল করার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে করোনার পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়া থাকতে হবে।
লাস ভেগাস: যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন নগরী লাস ভেগাসের হোটেল ও ক্যাসিনোতে জাঁকজমকভাবে নতুন বছর উদ্যাপনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া ঐতিহ্যবাহী আতশবাজিও ফোটানো হবে সেখানে।
ব্যাংকক: থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করে নববর্ষ উদ্যাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে ব্যাংকক পোস্ট জানায়। শুধু উন্মুক্ত স্থানে হবে এসব আয়োজন। এ জন্য বেশ কিছু নিয়মকানুনও বাতলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যেমন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে করোনার পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়া, উৎসবে যোগ দেওয়ার ৭২ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষা করানো এবং উদ্যাপনে অংশ নিতে আগে থেকেই নিবন্ধন করা।
সিডনি: অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী সিডনিতে বর্ষবরণে নেওয়া হচ্ছে নানা পরিকল্পনা। তবে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হলে টিকিট কাটতে হবে। করোনার পূর্ণ ডোজ টিকা বাধ্যতামূলক না হলেও সবাইকে টিকা নিয়ে উৎসবে যোগ দিতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।