মুখে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে নতুন পরামর্শ হিসেবে জনসমক্ষে অবশ্যই মাস্ক পরে চলার কথা বলা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে অবশ্যই মাস্ক পরে বাইরে চলাচল করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, নতুন তথ্যে দেখা গেছে, ফেস মাস্ক ‘সম্ভাব্য সংক্রামক ড্রপলেটের’ জন্য বাধা হিসেবে কাজ করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ পরামর্শের আগেই বেশ কিছু দেশ জনসমক্ষে নাগরিকদের চলাচলের ক্ষেত্রে মাস্ক পরার পরামর্শ, এমনকি তা বাধ্যতামূলক করেছে।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যুক্তি দিয়েছিল, সুস্থ মানুষের মাস্ক পরতে হবে, এমন পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই।
ডাব্লিউএইচওর কোভিড -১৯-এর প্রযুক্তিগত নেতৃত্বে থাকা বিশেষজ্ঞ ডা. মারিয়া ভ্যান কেরখোভ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য পরামর্শটি হলো ‘ফেব্রিক মাস্ক বা কাপড়ের মাস্ক’, অর্থাৎ একটি নন-মেডিকেল মাস্ক পরতে হবে।
সংস্থাটি সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছে, মেডিকেল ফেস মাস্ক অসুস্থ মানুষ এবং তাদের শুশ্রূষায় থাকা লোকেদের পরা উচিত।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষের দিকে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বজুড়ে ৬৭ লাখ মানুষ করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন । প্রায় চার লাখ মানুষ মারা গেছেন।
সংস্থাটি বলেছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলেোতে নতুন সমীক্ষা পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নতুন দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
মারিয়া ভ্যান কেরখোভ বলেন, ‘আমরা সরকারগুলোকে সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরার বিষয়ে উৎসাহী করার পরামর্শ দিচ্ছি ।’
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ব্যবহার করা যেতে পারে, এমন সরঞ্জামের মধ্যে মাস্ক একটি। এটি যেন মিথ্যা সুরক্ষাকবচের ধারণা তৈরি না করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, ‘মাস্ক নিজ থেকে আপনাকে কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা করবে না।’
বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জনসমক্ষে মাস্ক ব্যবহার করার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনায় এটি একটি বড় পরিবর্তন। দীর্ঘদিন ধরে সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা মাস্ক মিথ্যা সুরক্ষার ধারণা তৈরি করে—এমন পরামর্শে আটকে ছিলেন। মাস্ক পরা নিয়ে বিতর্ক এখনো চালু থাকলেও এটি সংক্রমণ ঝুঁকি রোধ করতে পারে, এমন প্রমাণ পাওয়ার পর তা সংস্থাটি মেনে নিয়েছে।
যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয় না, যেমন গণপরিবহন, বিপণিকেন্দ্র, শরণার্থী শিবিরের মতো জায়গাগুলোতে বাড়িতে তৈরি কাপড়ের মাস্ক দিয়ে অবশ্যই মুখ ঢাকতে হবে, যাতে সংক্রমণের বিস্তার না ঘটে। যাঁদের বয়স ষাটের বেশি এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে, তাঁদের সুরক্ষার জন্য মেডিকেল গ্রেড মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
যুক্তরাজ্যে গতকাল শুক্রবার ঘোষণা করা হয়েছে, হাসপাতালের দর্শনার্থী ও রোগীদের মাস্ক পরতে হবে। হাসপাতালের কর্মীদের ক্লিনিক্যাল ব্যবস্থা না থাকলেও মেডিকেল মাস্ক পরতে হবে।
করোনাভাইসে মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে ইতালিকে পার হয়ে গেছে ব্রাজিল। ৩৪ হাজার মৃত্যুর রেকর্ড নিয়ে দেশটি করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে এখন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনার বলেন, সদস্য দেশগুলো জুনের শেষ নাগাদ অবশ্যই অভ্যন্তরীণ সীমান্ত খুলে দেবে।
আজ শনিবার থেকে পর্তুগাল তাদের সৈকত খুলে দিচ্ছে। পোল্যান্ডে জিম, সুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক খোলা থাকবে।