ফরসা হতে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার করছে মানুষ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ তাদের ত্বক ফরসা করতে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার করছে। জার্মানির ‘ডের স্পিগেল’ পত্রিকা এ-সংক্রান্ত একটি খবর জানিয়েছে। পত্রিকাটির খবর বলছে, মানুষের মধ্যে ফরসা হওয়ার এই প্রবণতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি আফ্রিকা আর এশিয়ার দেশগুলোতে।

আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় ফরসা হওয়ার জন্য  ৭৭ শতাংশ নারী নানা ওষুধ ব্যবহার করেন। তারপরই রয়েছে এশিয়ার দেশ ভারত। দেশটিতে ৬০ শতাংশ নারী ফরসা হতে ক্ষতিকর সব ওষুধ ব্যবহার করছেন।

ফরসা হতে অনেকে ক্রিম, লোশন, সাবানজাতীয় প্রসাধনী, এমনকি ট্যাবলেট পর্যন্ত খাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে ছোট শিশুদের ত্বক ফরসা করতে ক্ষতিকর ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রসাধনী থেকে ভয়াবহ সব রোগ হচ্ছে বলে পত্রিকাটির খবরে জানানো হয়। এসব প্রসাধনীর কারণে ত্বক জ্বলতে পারে, ত্বকে দাগের সৃষ্টিসহ ক্যানসার হতে পারে। এ ছাড়া এসব ওষুধ যকৃৎ, কিডনি ও চোখের ক্ষতি করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ত্বক সাদা করতে এসব ওষুধ ও প্রসাধনীর ব্যবহারকে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ফরসা হওয়ার প্রবণতার পেছনে রয়েছে শতাব্দীকাল ধরে বহমান প্রাচীন বর্ণবাদী চিন্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিসে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের সহিংস মৃত্যুর পর বিশ্বব্যাপী ‘ব্ল্যাক লাইভ মেটার মুভমেন্ট’ নামে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়।

এই আন্দোলনে ত্বক ফরসাকারী পণ্যপ্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাপের মুখে পড়ে।

জার্মানির ‘ডের স্পিগেল’ পত্রিকাটির গ্লোবাল সোসাইটি দলের প্রধান লেনা গ্রেনার পত্রিকাটির আফ্রিকা ও এশিয়ার সংবাদদাতা অ্যানে ব্যাকহাউস, লাউরা হাফলিংগার এবং ভারতীয় গবেষক ও বিজ্ঞানী প্রদ্বিনী বিভালকারের সঙ্গে ফরসা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কথা বলেছেন। অ্যানে ব্যাকহাউস গবেষণা করেছেন, কেন ঘানার নারীরা নিজেদের ফরসা দেখতে চান এবং তাঁরা কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।

ভারতে জন্মগ্রহণকারী গবেষক প্রদ্বিনী বিভালকার নিজের দেশের বর্ণবাদ নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। জার্মানিতে বসবাসের পর তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর শ্যামলা রঙেরর ত্বকের যথেষ্ট কদর রয়েছে। লাউরা হাফলিংগারের এশীয় নারীদের ফরসা হওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেছেন, যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান বা ডেটিংয়ের সময় ত্বকের উজ্জ্বলতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসেবে বলিউডের সিনেমা জগতের কথা বলেছেন। সেখানে যোগ্যতার চেয়ে ফরসা চেহারার মানুষদের সুযোগ বেশি।