যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফল বদলে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ফন্দিফিকির করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আবার নির্বাচন দিতে সামরিক আইন জারি করা যায় কি না, এ বিষয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি।
খবরটি প্রথম প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস। এরপর দেশটির সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনও এই খবর প্রকাশ করে। খবরে বলা হয়, গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প তাঁর আইনজীবী সিডনি পাওয়েল, আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি, সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস এবং কাউন্সেল প্যাট সিপোলোনকে নিয়ে আলোচনা করেন।
মূলত নির্বাচনে ফল বদলে দিতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়েই ওই বৈঠকে আলোচনা হয়। এই ফল পাল্টে দেওয়ার জন্য যাঁরা যাঁরা তত্ত্ব হাজির করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম সিডনি পাওয়েল। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ভোট কারচুপির পেছনে ভেনেজুয়েলা রয়েছে। আর মাইকেল ফ্লিনকে সম্প্রতি ক্ষমা করেছেন ট্রাম্প। তিনি চলতি সপ্তাহে মার্কিন টেলিভিশন নিউজম্যাক্সকে বলেছিলেন, পুনরায় নির্বাচন দিতে ট্রাম্প সামরিক আইন ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে তিনি সেনা মোতায়েন করবেন এবং আবার নির্বাচন আয়োজন করবেন। বিষয়টি শুক্রবারের বৈঠকে উঠে আসে। ট্রাম্প বিষয়টি বৈঠকে উত্থাপন করেন। বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিদের কাছে তিনি জানতে চান, সামরিক আইন জারি করা যায় কি না। কিন্তু বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন জানিয়েছেন, ফ্লিনের প্রস্তাবিত এই ভাবনা খারিজ করেছেন বৈঠকে উপস্থিত অন্য উপদেষ্টারা। তবে ট্রাম্প এ পথে হাঁটবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
গত ৩ নভেম্বর ভোট হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এই ভোট শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনেন ট্রাম্প। এরপর বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মামলাও করেন। কিন্তু এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল বদলে দেওয়ার যে চেষ্টা, তা বন্ধ করতে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এরপরও ট্রাম্প তাঁর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্টের জয় নিশ্চিত করতে যেদিন ইলেকটোরাল কলেজ অনুষ্ঠিত হয়, সেই দিনও টুইট করে জানিয়েছেন, সব এখনো শেষ হয়নি।
শুক্রবারের বৈঠকে উপস্থিত দুটি সূত্র নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছে, নির্বাচনে কারচুপি তদন্তের দায়িত্ব সিডনি পাওয়েলকে দিতে চান ট্রাম্প। পাওয়েলকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দিতে চান তিনি। তবে এ পদক্ষেপ ট্রাম্প কবে ও কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন কিংবা আদৌ এই পদক্ষেপ নেবেন কি না, তা–ও স্পষ্ট নয়। যদিও ট্রাম্পের এই ভাবনার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করছেন ট্রাম্পের অধিকাংশ উপদেষ্টা। এর পেছনে কারণ হলো, মার্কিন নির্বাচনে ভোট কারচুপিতে ভেনেজুয়েলা জড়িত, এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি পাওয়েল।