রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বড় সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন দেশটির আপিল আদালত। পাশাপাশি তাঁর সাজা ৬ সপ্তাহ কমিয়ে দিয়েছেন। আজ শনিবার এএফপি ও রয়টার্সের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ১৭ জানুয়ারি জার্মানির বার্লিন থেকে রাশিয়ার মস্কোয় ফেরেন নাভালনি। তাঁকে বিমানবন্দরেই গ্রেপ্তার করা হয়। ২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন মস্কোর একটি আদালত। সেই থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।
২০১৪ সালের জালিয়াতির একটি মামলায় স্থগিত সাজার শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে স্থগিত সাজা কারাদণ্ডে রূপান্তর করা হয়। এ মামলায় তিনি ইতিমধ্যে এক বছর গৃহবন্দী ছিলেন।
নাভালনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে আজ বিচারক দিমিত্রি বালাসোভ তা খারিজ করেন।
রয়টার্সের খবর বলা হয়, নাভালনি আদালতকে বলেন, ‘আমি শো-অফ করতে চাই না। কিন্তু পুরো বিশ্ব জানে আমি কোথায় ছিলাম। আমি সুস্থ হয়ে উঠেই উড়োজাহাজের টিকিট কেটে দেশে ফিরি।’
দেশে ফেরা নিয়ে তাঁর কোনো অনুতাপ নেই। তিনি টিকে থাকবেন বলে সৃষ্টিকর্তার ওপর আস্থা আছে। আর তাঁর কাছে ‘সত্য হলো শক্তি’। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ অন্যায়ের ওপর গড়ে ওঠেছে। কিন্তু কোটি কোটি জনগণ সত্যিটা জানতে চায়। আগে হোক বা পরে হোক, তারা তা জানবে।’
গত বছরের আগস্টে সাইবেরিয়ার টমসক শহর থেকে উড়োজাহাজে করে মস্কোয় ফেরার সময় নাভালনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজ সাইবেরিয়ার ওমস্কে জরুরি অবতরণ করে। সেখানকার একটি হাসপাতালে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেখানকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য জার্মানির বার্লিনে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে তিনি ধীরে ধীরে সেরে ওঠেন।
পরে জার্মানির বিশেষজ্ঞরা জানান, নাভালনিকে রাশিয়ান নার্ভ এজেন্ট ‘নোভিচক’ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বিষ প্রয়োগের জন্য পুতিনকে দায়ী করেন নাভালনি। তবে পুতিন এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
নাভালনি ও তাঁর সমর্থকেরা এই বিচার ও অন্যান্য মামলাকে (নাভালনির বিরুদ্ধে) সরকারের দুর্নীতির প্রকাশ ও তাঁর রাজনৈতিক ইচ্ছাকে দমনের অজুহাত হিসেবে উল্লেখ করেন।
আগামী শনিবার তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির একটি মামলার শুনানি রয়েছে। এই মামলায় ১৩ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।