ড্যান পারকার, কার রেসিংয়ের পেশাদার খেলোয়াড়। তবে এখন চোখে দেখতে পান না তিনি। এক দশক আগে কার রেসিংয়ে অংশ নিতে গিয়ে দুর্ঘটনায় দৃষ্টিশক্তি হারান ড্যান। তবে চোখের আঁধার তাঁকে দমাতে পারেনি। দূরে রাখতে পারেনি রেসিং ট্র্যাক থেকে। এমনকি গাড়িতে গতি তুলে তিনি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনালের (ইউপিআই) প্রতিবেদনে গত সোমবার বলা হয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোতে স্পেসপোর্ট আমেরিকা নামের কার রেসিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন ড্যান পারকার। সেখানেই বিশ্ব রেকর্ড গড়েন তিনি। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ড্যানের জন্য বিশেষ একটি গাড়ি তৈরি করা হয়েছিল। ওই গাড়িতে ঘণ্টায় ২১১ দশমিক শূন্য ৪৩ মাইল গতি তোলেন তিনি।
ড্যান পারকারের আগে দৃষ্টিশক্তিহীন কোনো ব্যক্তি রেসিং ট্র্যাকে গাড়ি চালিয়ে এত বেশি গতি তুলতে পারেননি। এর আগের রেকর্ডটি ছিল ঘণ্টায় ২০০ দশমিক ৫১ মাইলের। সর্বোচ্চ গতির নতুন রেকর্ড গড়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুলেছেন ড্যান। পেয়েছেন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
এক দশক আগে যেদিন রেসিং ট্র্যাকে গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন ড্যান, ১০ বছর পর ঠিক সেদিনই সর্বোচ্চ গতিতে রেসিং কার চালিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন তিনি। রেকর্ড গড়তে তাঁর জন্য বানানো বিশেষ গাড়িটি নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কণ্ঠনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য ব্লাইন্ডসে’র দৃষ্টিশক্তিহীন ব্যক্তিদের গাড়ি চালানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রকল্পের অংশ হিসেবে ড্যান বিশ্ব রেকর্ড গড়তে রেসিং ট্র্যাকে নেমেছিলেন।
নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়তে পেরে ভীষণ উচ্ছ্বসিত ড্যান। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষেরা শুধু গাড়ি চালাতে পারেন এমনটা নয়, তাঁরা গাড়িতে ঘণ্টায় ২০০ মাইলের বেশি গতিও তুলতে পারেন। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের পক্ষে চাইলে যেকোনো কিছু করা সম্ভব। আমার এ অর্জন বিশ্বজুড়ে দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। এমনকি ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে স্বচালিত গাড়ি ব্যবহারে তাঁদের বাধা কাটাতে উৎসাহিত করবে।